Feminism 101: Myths and Other Things | Nadia Islam
English Summary:
The myths that we hear, the myths that we believe, the myths that we live on a daily basis as women – those are myths indeed. The myths that spread through Goebbels Theory by the patriarchal capitalist world that is anxious over nothing but masculinity and investment capital in the ‘holy’ name of the patriarchal male God – those are the emasculated yet powerful myths that have been feeding on female flesh in the unnavigable alleys of political economic social cultural religious structures for almost four thousand years. This write-up is a mindless effeminate gibberish of a non-existent fed-up feminist from a third world Muslim country who is losing her vagina off by debunking the myths of the ‘lesser women’ held by the ‘bra-burning, men-hating, upper-class privileged feminazis who propose anti-motherhood and liberating women at the expense of men’. She talks about myths that exist in the patriarchal lustful institutions and those patriarchal women foot-soldiers, the constructed hot and heavy ‘Madonna and Whore’ of a human vagina, the denotation and connotation of the word ‘chastity,’ and the physical psychological weakness that encircles the dominance of the slut-shaming that has been burning women alive, drowning them, undressing them in public just because they spoke up, just because they had the ‘non-existent and the oh-so-fudged-balls’ to stand up against the prejudice, the bigotry, the discrimination, the humiliation, the oppression they faced just because they were women.
This write up is highly demographic, since the author believes that the rise of feminism in the Indian sub-continent cannot be classified and divided into waves as it can be done in the Western part of the world. The land-based character of the Eastern civilization gave birth to the formidable myths that can only be understood as a vagina-carrier in the Indian sub-continent.
ইদানিং নারীবাদ নিয়ে লিখতে গেলেই হতাশ লাগে।
চারদিকে নারীবাদ নিয়ে এত অসংখ্য গোয়েবলস থিওরিপ্রসূত পুরুষতান্ত্রিক মিথ আর মিথ্যার অশিক্ষিত জাল, সেইসবের বূহ্য ভেদ করে যখন নারীবাদের অ-আ-ক-খ ব্যখ্যা করতে হয়, যখন শুনতে হয় নারীর শ্রেণীশত্রু নাকি নারী নিজেই; শুনতে হয়- যা কিছুই নারীবাদ- তা সমস্তই পেটি-বুর্জোয়া, সঙ্ঘবদ্ধ প্রলেতারিয়াত বা শ্রমিকশ্রেণীকে আলাদা করার ষঢ়যন্ত্র; শুনতে হয়, নারী মাত্রই শারীরিকভাবে ‘প্রাকৃতিকভাবে’ দুর্বল; শুনতে হয়- নারীবাদ মানেই বিলাসী কিটি পার্টির আন্দোলন বা নারীবাদের জন্ম পুরুষতান্ত্রিকতা আর পিতৃতন্ত্র টেকানোর জন্যই; শুনতে হয়- নারীবাদ অর্থ পুরুষবিদ্বেষ, পুরুষকে ক্ষমতাচ্যুত করে নারীর ক্ষমতা দখলের লড়াই; শুনতে হয়- নারীবাদ অর্থ ‘নারীত্ব’ আর ‘সাঁজ-সেঁজুতির ব্রত’ ত্যাগ করে বিয়েহীন, সন্তানহীন, ধর্মহীন, সমাজহীন ‘স্বেচ্ছাচারী’ ‘বহুগামী’ ‘বেশ্যার’ জীবনযাপন- তখন আমি হাসবো না কাঁদবো- না উঠে গিয়ে মাঠের মাঝখানে তিন চক্কর দিয়ে আসবো- ঠিক বুঝে উঠতে পারি না।
যেটা বুঝি তা হলো, ‘নারীবাদ’ শব্দের মধ্যে এমন কোনো অদ্ভুত শক্তি আছে যা শুনলেই পুরুষতান্ত্রিক পিতৃতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ধার্মিক ও শিক্ষা সংস্কৃতির ধারকবাহক বিদ্যাপতি সমাজপতিদের তিন ঠ্যাং এর তলায় ছয় পেগ শিভাস রিগ্যাল না গিলেই ধরণী টলটলায়মান হয়; যা বুঝি তা হলো, নারীর স্নেহের, মমতার, ভালোবাসার, প্রেমের, ত্যাগের অবমূল্যায়ন আর ক্ষমতার অপব্যবহারের যেই রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক বৈষম্য আর নির্যাতনের যেই হাজার বছরের সাংস্কৃতিক কমফোর্ট-জোন, তা নিজেকে ব্রিটিশ সূর্যের মত অস্তমিত হতে দেখলে, একদা পরাক্রমশালী সিংহের আজকে পদতলে বসে মিঁউমিঁউরত পোষা বেড়ালের মত পাশার ছক উলটে যেতে দেখলে ঠিক এইভাবেই উদ্বাহু নৃত্য করতে করতে জ্বলন্ত ককটেলের মত ঠাস-ঠাস ফেটে যাওয়ার কথা।
হতাশ হওয়ার সৌভাগ্য তাই আমার বেশিক্ষণ কপালে জোটে না। হতাশ হতে গিয়েও আমি পুরুষতান্ত্রিক ঠাসঠাস ককটেল নৃত্য দেখে বিমোহিত হই।
ভাবি, ভরতনাট্টম্য মণীপুরী কুচিপুরীর পাশাপাশি এই জিনিসও নৃত্যকলার নয়া ডিভিশান হতে পারে।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, বা বলা ভালো, ‘সমাজ’ নারীবাদকে ক্যানো ভয় পায় তার খুব সহজ ব্যখ্যা আছে। নারী পুরুষের শারীরিক পার্থক্য দিনের আলোর মত সত্য, অবশ্যই। নারী পুরুষের শারীরিক এবং সেই সূত্রে মানসিক পার্থক্য নিতান্তই বায়োলজিক্যাল। কিন্তু নারী প্রাকৃতিকভাবে বায়োলজিক্যালি দুর্বল নন। তাকে দুর্বল বানানোর রাজনীতি পুরুষতান্ত্রিক, তাকে কম খেতে দিয়ে, কম দৌড়াতে দিয়ে, শুধু পুতুল আর পুতুপুতু রান্নাবাটি খেলতে দিয়ে যুগ যুগ ধরে দুর্বল বানানো হয়েছে। এমনকি বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নারীকে দুর্বল করাও সিস্টেমেটিক পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতির অংশ।
প্রথমতঃ, আই-কিউ, অর্থাৎ ইনটেলিজেন্স কোশেন্ট, যা যুক্তিবিদ্যা, সমস্যা-সমাধানের বুদ্ধি, স্থানিক ক্ষমতা, সাধারণ জ্ঞান এবং স্মৃতিশক্তি অর্থাৎ কগনিটিভ ক্ষমতা নির্ণয়ের একধরণের মূল্যায়নে স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশানে পুরুষের বুদ্ধি তুলনামূলকভাবে নারীর চাইতে বেশি দেখা যায়। ক্যানো? তার কারণ, বিজ্ঞানীরাই উত্তর দিয়েছেন। আমি না। পুরুষের আই-কিউ তুলনামূলকভাবে বেশি কারণ,
(ক) পরিবার থেকেই ছোট বাচ্চা ছেলেরা ঔদ্ধত্য শিখেন, ছোট বাচ্চা মেয়েরা শিখেন সহমর্মিতা।
(খ) মেয়েদের পড়ালেখা ও মানসিক বিকাশে কম শ্রম দেন বাবা-মা।
(গ) মেয়েরা তুলনামূলকভাবে ছেলেদের চাইতে বেশি ইমোশনালি ইনস্টেবল।
(ঘ) বিবর্তনবাদের সামাজিক নিয়মে ছেলেদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে শিকারী/ যোদ্ধা এবং মেয়েদের মধ্য স্বাভাবিকভাবে সংগ্রাহক/ পরিষেবক/ শিক্ষক ইত্যাদি মানসিক চরিত্র তৈরি হয়।
(ঙ) পারিপার্শ্বিক সামাজিক নিয়ম। এবং
(চ) মেয়েদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ও সেই মারফত জেনেটিক্যালি প্রি-কনডিশন্ড স্নেহ ও ভালোবাসার প্রবণতা।
তবে, আই-কিউই কী সব? মায়ো ক্লিনিকের বিজ্ঞানীরা এরমধ্যেই প্রমাণ করেছেন, মেয়েদের স্মৃতিশক্তি ছেলেদের চাইতে বেশি এবং মেয়েরা একই সাথে অনেক কাজ সমান দক্ষতায় করতে পারেন। ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণে মেয়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছেলেদের চাইতে ভালো, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ বিজনেস গভর্নেন্স এ্যান্ড এথিকস তাদের রিসার্চে দেখিয়েছেন নারী-পরিচালিত যেকোনো সংস্থা পুরুষ-পরিচালিত সংস্থার চাইতে বেশি সফল, ব্রিটিশ স্টাডি দেখিয়েছে ৭৭% ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় ভালো গাড়ি ও ভারী যন্ত্রাংশ চালান। ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়া এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি তাদের রিসার্চে দেখিয়েছেন মেয়ে ছাত্ররা ছেলে ছাত্রদের তুলনায় ভালো ফলাফল করেন।
খেয়াল করে দেখবেন, মেয়েদের আই-কিউ তুলনামূলক কম এবং মেয়েরা বিজ্ঞানে গবেষণা সহ মাথা খাটাতে হবে এমন পেশায় কম যান, তার কারণ যতটা না শারিরীক বা মানসিক, তার চাইতে বেশি সামাজিক। একজন মেয়েকে যেই পরিমাণ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, পারিবারিক বাঁধা ডিঙ্গিয়ে, ট্যাবু ভেঙ্গে, সেক্সুয়াল ডিসক্রিমিনেশান পার হয়ে পি-এইচ-ডি বা উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত যেতে হয়, তার অর্ধেকও একজন ছেলের ফেইস করতে হয় না। একজন ছেলে বিজ্ঞানীর রাত করে বাড়ি ফেরা নিয়ে, বা রান্না না করা নিয়ে, বা তিরিশের মধ্যে সন্তান জন্ম দিয়ে উনাকে না পালা নিয়ে সমাজের রক্তচক্ষু দেখতে হয় না।
সন্তান জন্মদানকে শুধু সন্তান জন্মদান বা হিউম্যান রেইস টেকানোর বায়োলজিক্যাল টুল ভাবলেও ভুল ভাবা হবে। সন্তান জন্ম দেওয়া এবং সেই সন্তানের ‘পিতৃপরিচয়’ দাবীর মাধ্যমে সম্পত্তির বন্টন এবং সেই সূত্রে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি নির্ধারিত হয়। উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতির প্রাথমিক ধারণাও সন্তান জন্মদান কেন্দ্রিক। সস্তায় শ্রমিক উৎপাদন যেহেতু এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রাথমিক এজেন্ডাগুলির মধ্যে একটা, সেহেতু উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতির জন্মের সাথে সাথে লৈঙ্গিক রাজনীতিরও জন্ম হয়েছিলো। কারণ এর মাধ্যমে নারী এবং পুরুষকে তাদের লিঙ্গভিত্তিক দায়িত্ব নির্ধারণ করে দিয়ে নারীকে দিয়ে সন্তান জন্মদানই যে নারীর একমাত্র সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব তার ‘ঈশ্বর এ্যাপ্রুভড ধর্মের পানিপড়া’ খাইয়ে ঘরে আটকে রাখা সহজ ছিলো। এইক্ষেত্রে অবশ্যই বলতে হবে, লৈঙ্গিক রাজনীতি শুধু নারীকে তার ধর্মীয় সামাজিক দায়িত্ব ভাগ করে অবদমন করে নাই, এইক্ষেত্রে একই রাজনীতির শিকার পুরুষও। অর্থাৎ উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি টেকানোর স্বার্থে তার এজেন্ডাকে ঈশ্বরের নির্দেশ নামে সুগারকোট করে নারী এবং পুরুষ উভয়কেই তাদের দায়িত্ব নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। নারীর জন্য সন্তান জন্মদান যেমন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, ঠিক একইভাবে পুরুষের জন্য সেই সন্তান দেখভাল করার অর্থ উপার্জন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও বাধ্যতামূলক হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে নারীবাদ কি সন্তান জন্মদানের বিরোধী? আবার একই সাথে অনেককেই বলতে শুনবেন, উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি হোক আর যাই হোক, নারীকে এই ‘সামান্য’ দায়িত্ব দিয়ে পুরুষকে যে অর্থ উপার্জনের ‘কঠিন’ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে তো নারীর খুশি হয়ে আনন্দে তিনখান ডিগবাজি দিতে দিতে মূর্ছা যাওয়ার কথা! বলতে শুনবেন, নারীবাদীরা ‘আসলে’ যে কী চান, তারা নিজেরাই তা জানেন না!
না, নারীবাদ অতি অবশ্যই সন্তান জন্মদান বিরোধী না। কিন্তু নারীবাদ নারীর সেই সন্তানকে পিতৃতন্ত্রের সম্পত্তি হিসাবে দেখতে নারাজ, নারীবাদ নিজের যোণী এবং নিজের গর্ভকে পুরুষতন্ত্রের আজ্ঞাবহ দাস হিসাবে দেখতে নারাজ এবং সর্বোপরি, সন্তান জন্ম দেওয়া না দেওয়া কেন্দ্রিক সিদ্ধান্তে নারীবাদ সমাজপতিদের রক্তচক্ষু আমলে আনতেও নারাজ।
নারীবাদ সেইকারণে সমাজের নির্ধারণ করে দেওয়া বাধ্যতামূলক দায়িত্বের চাইতে নারীর নিজের শরীর নিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যক্তিগত স্বাধীন ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করে। উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি নিজের স্বার্থে নারী এবং পুরুষকে সমষ্টিগতভাবে বিবেচনা করেছে গত প্রায় চার হাজার বছর। নারীবাদ এই সমষ্টিবাদের বিপক্ষে। কারণ মানুষকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা না করার, তাকে শুধুমাত্রই এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আজ্ঞাবহ দাস হিসাবে সস্তায় শ্রমিক উৎপাদনের কারখানা হিসাবে বিবেচনা করার, তাকে শুধুই শারীরবৃত্তিয়ভাবে দেখার এই আয়ুক্ষয়কারী, বস্তুবাদী সমষ্টিবাদ নারী পুরুষ ইন্টারসেক্স নির্বিশেষে কোনো মানুষেরই জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না বলে নারীবাদ বিশ্বাস করে। নারীবাদ ঠিক এই জায়গায় ভাববাদী দর্শণ হয়ে ওঠে, ঠিক এই জায়গায় বস্তুবাদী রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়াশীলতার রাজনীতির বাইরে সাম্যবাদী দর্শণ হয়ে ওঠে।
তবে হ্যাঁ, নারীবাদ আর সাম্যবাদ আলাদা ডিসকোর্স অবশ্যই। নারীবাদ সাম্যবাদের কথা বলেও নিজেকে সাম্যবাদ বলে না, কারণ নারীবাদ এক্সক্লুসিভলি নারীদের নিয়েই কথা বলে। নারীবাদের আগে পৃথিবীর কোনো দর্শণই নারীর উপর নির্যাতন আর বৈষম্য আর মানুষ হিসাবে তার অবমূল্যায়নের কথা বলে নাই। তাই নারীবাদ যদি এক্সক্লুসিভলি নিজের কথা বলে, আপনার এত অঙ্গ জ্বলে ওঠার কিছু হয় নাই।
আর অঙ্গ জ্বললে অঙ্গে পানি দেন। তবে আপনার অঙ্গ তেল, মদ বা গ্যাসোলিনের মত দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি হলে অঙ্গে কার্বন ডাই অক্সাইডের বাতাস দেন।
আর তাই, সাম্যবাদ যদি মানুষের উদ্দেশ্য হয়, নারীবাদ হয় তার পথ। নারীবাদ সাম্যবাদের চর্চায় এক্সক্লুসিভলি তাই নারীর যৌন স্বাধীনতার কথাও বলে। আর এই যৌন স্বাধীনতা অর্থ হাটে মাঠে ঘাটে যত্রতত্র শুয়ে বেড়ানো না। যৌন স্বাধীনতা অর্থ বহুগামিতাও না। যৌন স্বাধীনতা অর্থ বিয়ে বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে মেডিকেল কলেজের আঙ্গিনা ‘পিতৃপরিচয়হীন’ শিশুর কান্নাকাটিতে ভরে তোলাও না।
যৌন স্বাধীনতা অর্থ নিজের যৌন জীবন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া। এবং সর্বোপরি, যৌনতাকে উপভোগ করতে শেখা।
আধুনিক পুঁজিবাদ নারীকে দিয়ে তার পোশাক খুলিয়েছে সত্য, আবার একই সাথে উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি থেকে আধুনিক পুঁজিবাদের ‘সাইড-কিক’ ধর্ম সেই একই কাপড় নারীকে পরিয়েছে গত কয়েক হাজার বছর। উদ্বৃত্ত সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি আর প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের আবির্ভাবের টাইমলাইন ক্রিটিক্যালি অবজার্ভ করলেই বুঝতে পারা সম্ভব আমি কী বলছি। খেয়াল করে দেখবেন, এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার তাবেদার সামন্ততন্ত্র এবং রাজতন্ত্র নিজেরা যা বলতে চেয়েছে, তা নিজে না বলে ধর্মের বইয়ের মারফত ‘ঈশ্বর’কে দিয়ে তাই বলিয়েছে। ক্যানো? কারণ ঈশ্বরের এ্যাপ্রুভালের সিল না থাকলে নারী পুরুষ ইন্টারসেক্স কোনো মানুষের পক্ষেই সমাজ নির্ধারিত দায়িত্বের বেড়াজালে ঢোকা সম্ভব হতো না। কারণ বুদ্ধিমান পুরুষতান্ত্রিক ধর্মপ্রবর্তারা বুঝেছিলেন, মানুষকে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক আদর্শগত জায়গায় এক করতে বা সমাজ সংস্কার করতে যে মতবাদ তারা প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছেন, তাতে মানুষের স্বভাবজাত ‘অজানার ভয়’ বা ‘অন্ধকারের ভয়’ বা ‘মৃত্যুর ভয়’কে ‘ঈশ্বরের ভয়’ এ রূপান্তর জরুরী।
এবং সেকারণেই এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং ধর্ম উভয়ই নারীকে উৎপাদনক্ষম ভোগ্য বস্তু ছাড়া অন্য অর্থে দেখে না। অথচ পশ্চিমা পুঁজিবাদের স্পর্শহীন রাজতান্ত্রিক এবং সামন্ততান্ত্রিক ভারতীয় উপমহাদেশে মাত্র কিছুদিন আগেই নারীর নগ্নতা এবং যৌনতা নিয়ে কোনো ট্যাবু কাজ করে নাই! রামায়ন মহাভারত ঋগ্বেদ উপনিষদ মোটাদাগে পুরুষতান্ত্রিক হলেও মহাভারতে অবিবাহিত উলুপি অর্জুনকে বলেছিলেন, একজন নারী নিজের যৌনচাহিদা পূরণ করতে একজন অবিবাহিতের সাথে রাত কাটালে ধর্মে বাধা নাই। ঋগ্বেদে ভাই যমকে নিজের যৌনচাহিদার কথা জানিয়ে বোন বলেন, একজন ভাইয়ের দায়িত্ব তার বোনের ইচ্ছা পূরণ করা! ৮ম শতকের শেষে মুসলিম সুফি সাধক রাবিয়া আল আদওয়াইয়ার মত প্রচুর নারী শায়িখা বেহেশত কামনায় বা দোজখের ভয়ে না, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন মহাপ্রভুর সঙ্গ কামনা করে। এবং জেনে রাখা ভালো, সেই সঙ্গ শুধু মানসিক সঙ্গ না!
অজন্তা ইলোরা থিকা কনার্ক- খাজুরাহো, ঋগবেদ থেকে কামসূত্র বা রামায়নসহ প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে (অর্থাৎ সংস্কৃতিতে) কোথাও উপমহাদেশের মেয়েদের শুধুমাত্র প্রজনন অর্থাৎ বংশবৃদ্ধির স্বার্থে যৌনতায় অংশ নিতে দেখা যায় না। তাদের প্রত্যেককেই দেখা যায়, পুরুষের মতই একইভাবে অর্গ্যাজমসহ যৌনতা উপভোগ করছেন এবং এই প্রক্রিয়ায় কে দাতা কে গ্রহীতা বা কে কনজিউমার কে কমোডিটি তা নিয়ে প্রশ্ন আসছে না।
অবশ্য উপমহাদেশীয় যৌনতায় নারীকে যে সাবঅর্ডিনেট করে দেখা হয় না তা না। সিগমুন্ড ফ্রয়েড পুরুষের সাইকোএ্যানালিসিস করে বলেছিলেন, বেশিরভাগ পুরুষই তাদের তুলনায় নিচে অবস্থান করছেন এমন নারীর প্রতি সেক্সুয়ালি আকৃষ্ট থাকেন। (এ্যাজ ইফ, পুরুষ বিশ্বাস করেন, কোনো নারী তাদের তুলনায় উচ্চে অবস্থান করেন, হাহা!) সেটা আব্রাহামিক বা বলা ভালো, ইসলামী সভ্যতার প্রবেশ পরবর্তী উপমহাদেশের পুরুষের জন্য আরো বেশি সত্য। তাই সাহিত্য থেকে শুরু করে আধুনিক পর্নোগ্রাফি, বেশিরভাগক্ষেত্রেই মেয়েদের সেক্সুয়ালিটিকে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থিকা দেখা হয়।
আমাদের প্রাণপ্রিয় বংকিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে সমরেশ মজুমদার, বিমল কর, শরদিন্দু, ইদানিংকালের হুমায়ুন আহমেদ- কেউই সেই ‘দোষ’ থেকে বের হতে পারেন নাই। রবীন্দ্রনাথ হৈমন্তীর বর্ণনা দিতে গিয়ে “কবে যে তাহার সমস্ত শরীর ও মন যেন উৎসুক হইয়া উঠিল” বলেই খালাস হয়েছিলেন! বংকিমচন্দ্রের দেবী চৌধুরাণীতেও একই জিনিস দেখা যায়। সবিনয় নিবেদনে বুদ্ধদেব গুহ বলছেন, “যে নারী প্রকৃতই স্বাধীন, মুক্তি যার কাছে কথার কথা নয়, ধ্রুব সত্য; সেই সবচেয়ে বেশী পুরুষের কাছে ছোট হতে চায়, সমান হতে নয়।”
সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসলামসহ সকল আব্রাহামিক ধর্মই একমাত্র মেয়েদের পর্দার ভিতর এনে তাদের উপর পবিত্রতার সংজ্ঞা চাপিয়ে তাদের যৌনতাকে লজ্জার বস্তু বানিয়ে দিয়েছিলেন তা সত্য না। উপমহাদেশে রাজতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্র আমলে এবং ইসলাম পরবর্তী সময়ে সকল ধর্মই নিজেদের স্বার্থে মেয়েদের যৌনতাকে অবদমন করেছে। সেই অবদমনের সাথে যখন পশ্চিমা লগ্নিপুঁজি এসে যুক্ত হলো, তখন নারীকে বানানো হলো- ম্যাডোনা এ্যান্ড হোর! অর্থাৎ, মেয়েরা একইসঙ্গে মাতৃস্থানীয়, পূজনীয় কিন্তু মুদ্রার অন্য পিঠের মতই তারা বেশ্যা, তারা যৌন আবেদনময়ী, তারা বিক্রয়যোগ্য! যৌনতা এখানে দখলদারিত্বের বিষয়- দ্বিপাক্ষিক উপভোগের বিষয় না, যেন যৌন আবেদন নারীর ধর্ম, পুরুষ তা কিনবেন, কিন্তু যেই নারী নিজ ইচ্ছায় তা বেঁচতে যাবেন, তার প্রতি পুরুষের করুণাও থাকবে না! তাই উপমহাদেশের পুরুষ নিজে বিয়ের আগে একশ চল্লিশ জায়গায় শুয়েও বিয়ের জন্য সতিচ্ছেদওয়ালা এবং উদ্ভিন্নযৌবনা কুমারী মেয়ে খোঁজেন!
যৌনতা বলতে উপমহাদেশের পুরুষ কতদূর কী বোঝেন সেটা গবেষণার বিষয়। বাংলা যৌন শব্দের অর্থ যোনীসম্বন্ধীয়। যোনীসম্বন্ধীয় শব্দের অপর নাম বিয়ে (মনুসংহিতা সূত্রে) – এবং বিয়ে বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে ‘পুত্র’ জন্মের উদ্দেশ্যে নারী-পুরুষের সম্পর্ক বোঝানো হলে, সেই সম্পর্ক পুরুষতান্ত্রিক হবে সেটা বুঝতে তো আর রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না, নাকি? ইসলামেও নারীর যৌনতা নিয়া মাথা ঘামানো হয় নাই। ইসলামে নারীকে স্ত্রী বা কন্যা বা বোন হিসাবে তার সম্পত্তির প্রাপ্য হিস্যা দিয়েছে সত্যি, কিন্তু শরীরের চাহিদা নিয়ে ইসলাম সহ আব্রাহামিক কোনো ধর্মই যৌনতার ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের সমান অধিকার দেয় নাই।
অবশ্য সম্পদের দখলদারিত্ব যার উদ্দেশ্য- এমন কোনো পুরুষতান্ত্রিক দর্শণের নারীর যৌনতা নিয়া মাথা ঘামানোর টাইম থাকবেই বা ক্যানো বলেন? নারীরা নিজেরা যেখানে নিজের স্বাভাবিক যৌনতার চাহিদার কথা, ভালোলাগার কথা বলতে পারেন না সেখানে পুরুষতন্ত্রের কী ঠেকা, তাদের মুখে তুলে পোলাও কোর্মা কোকাকোলা খাওয়াবে?
তাই সম্পত্তি বগলে রাখা ক্ষমতার চর্চা করা পুরুষতান্ত্রিকতা যৌনতা নিয়ে নারীর এমনকি কথা বলা ঠেকাতে ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’ টাইপের বাক্যে আটকে তাদের সতীসাধ্বী বানিয়ে বেশ্যাপাড়া টিকিয়ে রেখে ঘরের মৃদুমৃদু গলার স্বরের বউদের গলার স্বর আরো মৃদুমৃদু বানানোর জন্য ‘নষ্ট’ ‘কূলটা’ ‘চরিত্রহীনা’ ‘স্বৈরিণী’ ‘স্বেচ্ছাচারিণী’ ইত্যাদি মারদাঙ্গা টাইটেল দিবেন, আর নারীও যেন এই টাইটেল না পেতে হয়, এমন প্রার্থনায় সারাজীবন ‘ভালো’ হয়ে কাটিয়ে নিজের যৌনতাকে শুকনা রুটি আর পানি দিয়ে গিলে খেয়ে সংসারধর্ম পালন করতে করতে নিজের শরীরকে ভুলে যাবেন!
নারীকে এই ‘নষ্ট’ ‘কূলটা’ ‘চরিত্রহীনা’ ‘স্বৈরিণী’ ‘স্বেচ্ছাচারিণী’ ইত্যাদি মারদাঙ্গা টাইটেল দিয়ে নিজ শরীরকে পুরুষের সম্পত্তি ভাবতে শেখানোর রাজনীতি তো আজকের না, এই রাজনীতি পুরানো।
রানী প্রথম এলিজাবেথের মা রানী এ্যান বো’এইন ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরির দ্বিতীয় স্ত্রী। এ্যান বিখ্যাত (বা বলা ভালো, কুখ্যাত) ছিলেন তার জেদী, উচ্চাকাংখী, অনমনীয়, অবাধ্য ও ঘাড়-ত্যাড়া চরিত্রের জন্য। একে তিনি জন্ম দিয়েছেন কন্যা সন্তান, তার উপর ঘাড়-ত্যাড়া, এমন নারীকে মেনে নিবেন, ১৫ শতকের পেট মোটা রাজার এত সহ্যশক্তি হয় নাই। সুতরাং, এ্যানের উপর ‘অপ্রমানিত’ ব্যাভিচারের ট্যাগ লাগিয়ে তাকে জনসম্মখে জবাই করা হয়েছিলো। এ্যানের কন্যা রানী প্রথম এলিজাবেথ কোনোদিন বিয়ে করেন নাই। তিনি আজীবন কুমারী ছিলেন। ইংল্যান্ডের স্বর্ণযুগের একজন ক্যারিশম্যাটিক- বুদ্ধিমান- বিচক্ষণ- প্রজাবান্ধব শাসক, যিনি ক্রাউন, চার্চ এবং সংসদ, এই তিনকে একইভাবে সমান দক্ষতায় সামলাতে পারছেন, এমন একজন ১৬ শতকের কমবয়স্ক মেয়েকে, তাও আবার অবিবাহিত, মেনে নেওয়া সবার জন্য সহজ হিসাব ছিলো না। তার বিরুদ্ধে প্রচুর রসালো গল্প চালু ছিলো, তার মধ্যে একটা হলো, তিনি নাকি আসলে মেয়েই ছিলেন না! ১৯১০ সালে লেখক ব্র্যাম স্টোকারের উপর ‘ওহী নাযিল’ হলে তার ‘ফেমাস ইমপস্টারস’ বইয়ে লেখেন- রানী এলিজাবেথের ছদ্দবেশে কোনো একজন পুরুষ নাকি ইংল্যান্ডকে বোকা বানিয়ে ৪৫ বছর ধরে শাসন করে গেছেন! (কারণ, কোনো ‘একলা’ মেয়ের পক্ষে রাজ্য শাসন অসম্ভব কীনা, হাহা!) মিশরের রানী ক্লিওপেট্রার ঘটনাও একইরকম। একজন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ‘ব্যক্তিস্বাধীন’ মেয়ের ‘এত’ ক্ষমতা হজম করতে না পেরে পুরুষের স্বভাবজাত সেক্সুয়াল অস্বস্তি এবং নৈরাশ্য ও নারীবিদ্বেষ থেকে তাকে স্লাট-শেইমিং করে ব্যাভিচারি বানানো হয়েছিলো একসময়।
স্লাট-শেইমিং কী কী কারণে হয়, তার প্রচুর পুরুষতান্ত্রিক ব্যাখ্যা আছে। এইযুগের জন্য সবচাইতে হাস্যকর ব্যাখ্যা ‘বিবর্তনবাদ’ মারফত এক প্রকার সিউডো-বায়োলজিক্যাল ‘জেনেটিক্যালি হেরেডিটরি’ ব্যাখ্যা। এই ব্যাখ্যা বলে, বিবর্তনবাদ মেয়েদের নিজের মানব-স্পিশিস টেকাতে নিজের গোত্রের ভিতর ‘সবচাইতে’ ‘নিরোগ’, ‘সামাজিক-ভাবে উচ্চস্থানীয়’, ‘অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী’, ‘নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন’ ‘একজন’ ‘শক্তিশালী’ ‘সুদর্শণ’ পুরুষের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেওয়াকে উৎসাহীত করে।
কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন, এই ব্যাখ্যা সঠিক হতে পারে প্রি-হিস্টরিক থেকে রাজতন্ত্র ও সামন্তযুগীয় পিতৃতান্ত্রিক মানুষের জন্য, যেইখানে নারীর ‘দাম’ তার যোণীর ‘দাম’ দিয়ে নির্ধারিত হয়। জন্মনিয়ন্ত্রহীন প্রি-পুঁজিবাদ সামন্ততান্ত্রিক সমাজে একজন নারী একাধিক পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে সেটা সমাজের সামন্তপ্রভুদের সম্পত্তি রক্ষার লড়াইয়ে ক্যাটাস্ট্রফিক একটা ঝামেলা তৈরি করতে পারে, বা একজন নারীর একাধিক পুরুষ সঙ্গী থাকলে সবচাইতে ‘সঠিক’ ‘আলফা-মেল’ পুরুষ সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার ‘খারাপ’ বিচারবোধ মারফত তিনি নিজেকে এবং নিজের ভবিষ্যত সন্তানকে বায়োলজিক্যাল ঝামেলায় ফেলে দিতে পারেন, তাই সেই সমাজে মেয়েদের বহুগামিতা ঠেকাতে স্লাট-শেইমিং ‘হয়তো’ দরকারী বিষয় ছিলো। একইভাবে ঐ সমাজে বিবর্তনবাদ এবং ধর্মের একজন পুরুষের একাধিক মেয়ের সাথে শোয়াও সমর্থন করাও স্বাভাবিক ছিলো, কারণ, যত বেশি স্ত্রী, তত বেশি সন্তান এবং তত বেশি বায়োলজিক্যাল জিনের মারফত ‘নিরোগ’ উত্তরসূরী তৈরি ও সেই মারফত তত বেশি সম্পত্তি দখলের সম্ভাবনা থাকে।
একজন বিড়াল একইসাথে পাঁচজন বাচ্চা যে কারণে প্রডিউস করেন, একজন পুরুষও সেই একই কারণে বহুগামিতা প্র্যাকটিস করেছেন ঐ সময়। মানুষ যদি পাঁচজন বা পাঁচশ’ জন বাচ্চা একসাথে জন্ম দিতে পারতেন, তাহলে পুরুষের বহুগামিতা ঠেকানো যেত কীনা এটা একটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। সিরিয়াসলি।
কিন্তু আধুনিক সমাজে যেখানে পুঁজিবাদ আর ধর্মের পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা উপেক্ষা করে নারী পুরুষের সমান বা তার চাইতেও বেশি শিক্ষিত হয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, সেই যুগে স্লাট-শেইমিং শুধুমাত্র একজন নারী কয়জন পুরুষের সাথে শুচ্ছেন, অর্থাৎ বহুগামিতা দিয়ে নির্ধারিত হয় না। একজন নারী, যিনি পুরুষ সিংহের ক্ষমতা অগ্রাহ্য করে নিজ গৌরবে ও মহিমায় বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র, ধর্ম, সমাজ এবং সর্বোপরি হলিউডি হৃদয়-আর্দ্র করা ‘মেয়েদের একগামিতা’ এবং ‘পুরুষের বহুগামিতা’ প্রমোট করা ঢিস্টিং ঢিস্টিং প্রেমের সিনেমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ডিভোর্স দিয়ে বা না দিয়ে, একাধিক পুরুষের সাথে শুয়ে বা না শুয়ে, সন্তান জন্ম দিয়ে বা না দিয়ে নিজের যুদ্ধ একলা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাকে পুরুষতান্ত্রিক- পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ও ধর্ম ভয় পাবে বলাই বাহুল্য!
আর এই ভয় থেকেই শুরু হয় স্লাট-শেইমিং। এবং এই স্লাট-শেইমিং শুধু যে পুরুষ করেন, তা না, পুরুষতন্ত্রের নারী চাকরেরাও সেই কাজে সমান পারদর্শী। পুরুষতন্ত্রের এই নারী চাকরেরা সকল রূপে, সকল স্বাদে, সকল গন্ধে, সকল বর্ণে, সকল দ্রাব্যতায় ঈশ্বরের মত সর্বত্র বিচরণ করেন। এদের সাইকোএ্যানালিসিসও তেমন কঠিন কিছু না। সিমোন দ্যা বেভোয়া বলেছিলেন, “একজন নারী- নারী হিসাবে জন্ম নেন না, তারা নারী হয়ে ওঠেন!” এই পুরুষতান্ত্রিক নারীরাও নিজেরা বাবার, ভাইয়ের, স্বামীর, ধর্মের, সমাজের শাসনে নিজের অজান্তে নিজের অস্তিত্ব টেকাতে পুরুষতান্ত্রিক নারীতে পরিণত হন। পুরুষতান্ত্রিক এইসকল নারীর সবচাইতে উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে ছেলের বউয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা আমাদের বেশিরভাগ শ্বাশুরিরা। এছাড়াও আমাদের পুরুষতান্ত্রিক মা খালারাই ডিভোর্সি একজন নারীর দিকে চোখ ব্যাঁকা করে তাকান, আমাদের পুরুষতান্ত্রিক মেয়ে বন্ধুরাই পেট বের করে শাড়ি পরা, ব্রার স্ট্র্যাপ বের হয়ে থাকা আমাদের বেশ্যা ডাকেন, আমাদের পুরুষতান্ত্রিক বড় বোনরাই আমাদের ছেলেবন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়াতে দেখলে আমাদের শরীর এবং নৈতিকতা নিয়ে বড় বড় লেকচার দেন। তাতে আমাদের খুব লজ্জা হয়, আমরা খুব অপমানিত হই, তাতে আমরা হাত পা ছড়ায়ে শাবানা স্টাইলে কাঁদি, কেউ কেউ আত্মহত্যা করি। সেই আত্মহত্যা দেখেও পুরুষতান্ত্রিক বড় আপারা জ্ঞানের বাণী দেন, ‘নষ্টামী করলে এমনই হয়!’
সপ্তম শতকে বাই শি বলে এমন একজন বড়-আপা সুলভ পুরুষতান্ত্রিক ভদ্রমহিলা ‘ন্যায়পরায়ন মেয়েদের ৭৯তম আত্মজীবনী’ বইয়ে লিখেছিলেন, “নারীত্ব হলো দয়াশীলতার ভিত্তি, নিজের জীবন দিয়ে নিজের সতীত্ব ধরে রাখা হলো পবিত্রতা ও ন্যায়নিষ্ঠতার স্বাক্ষর!”
হিহি, কী বললেন? সতীত্ব? সেটা কী জিনিস? খায় না মাথায় দেয়?
খাড়ান, একটু হাইসা লই!
প্যাটেরনারি আনসার্টেইনটি এই যুগে আর নাই। ডি-এন-এ ফি-এন-এ টেস্ট পর্যন্ত যেতে হয় না, একজন নারী এখন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ‘কার’ সন্তান ‘কখন’ জন্ম দিচ্ছেন, তার হিসাব সহজেই রাখতে পারেন। সুতরাং, পুরুষের বহুগামিতার পাশাপাশি মেয়েদের বহুগামিতা এবং নিজেদের সেক্সুয়ালিটি চর্চায় বায়োলজিক্যাল আর কোনো বাধা নাই।
পুরুষতন্ত্র যেই বিষয় অগ্রাহ্য করে গেছে, তা হলো, মানুষ এখন শুধু সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য শুয়ে থাকেন না। পুরুষ যেই ফূর্তি এতশ’ বছর যাবৎ করে এসেছেন সগৌরবে, সেই একই ফূর্তি নারীও প্রকাশ্যে করলে সমাজ এখন আর ভেঙ্গে পড়বে না। ইন্টারনেট ও বিশ্বায়নের এই যুগে মানব সমাজ ভেঙ্গে গুড়া-গুড়া হওয়ার আর কোনো সম্ভাবনাও নাই।
আর তাই যেসব শক্তিশালী নারীবাদী প্রথাভাঙ্গা মেয়ে পুরুষতন্ত্রের এই রাজনীতির ফাঁক-ফোঁকড়গুলি ধরিয়ে দিয়েছেন, পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, নিজের স্বাধীন ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন, বলেছেন- শরীর শুধু পুরুষের একলার না, নারীর শরীরের অধিকার নারীর, বলেছেন যৌনতা উপভোগের অধিকার নারীর আছে, বলেছেন, নারীকে দুর্বল বানানোর রাজনীতি পুরুষতন্ত্রের শয়তানি রাজনীতি, তাদেরকেই পুরুষতন্ত্র দমন করতে চেয়েছে, স্লাট-শেইমিং এর মাধ্যমে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিতে চেয়েছে, তাদের সমাজবিরোধী বলে দলছুট করে দিতে চেয়েছে। মাতৃতন্ত্র পরবর্তী পৃথিবীতে সামন্ততন্ত্র এবং ব্যক্তিমালিকানা ও লগ্নিপুঁজি শুরুর সাথে সাথে, চাষাবাদের অগ্রগতির সাথে সাথে সভ্যতার ক্রমবিকাশের পথে নারী সন্তান জন্মদানের মত স্বাভাবিক কিন্তু প্রতিবন্ধকতাসৃষ্টিকারী ‘মায়া-উৎপাদনকারী’ দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নিজেরাই ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছেন, সত্য! কিন্তু আজকের দিনে নারীকে আর চার হাজার বছর পুরানো বাণী দিয়ে বোকা বানানো সহজ না। হ্যাঁ, বেগম রোকেয়া আজকের দিনে জন্মালে অনলাইনের যৌন নিপীড়করা উনার নামে ডেসপারেটলি সিকিং টাইপ নোংরা পেইজ খুলে এবং উনার ‘গোপন’ ভিডিও ভাইরাল করে দিয়ে, উনার ক্যানো ডিভোর্স হচ্ছে না এমন খবর দিয়ে অনলাইন পোর্টাল ভরে উনার কোমড় ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করতেন নিশ্চিত। কিন্তু তাতে তিনি দমতেন বলে মনে হয় না।
আমি তাই হানা মোরের মত কনজারভেটিভভাবে ‘মেয়েরা শুধু মেয়ে’ এই চিন্তা যেমন করি না, মেরি ওউলস্টোনক্রাফ্টের মত আমার মেয়েদের পুরুষ হয়ে ওঠার রাডিক্যাল চিন্তাও নাই। আমি মনে করি, স্বাধীনতার পথে একজন নারী তার বায়োলজিক্যাল স্বত্ত্বা অর্থাৎ নারীত্বকে সাথে রেখেই পুরুষাধিপত্যবাদকে খারিজ করেই একজন পুরুষের সমান (বা বেশি) কাজ ও চিন্তা করার সামর্থ্য এবং অধিকার রাখেন। আমি বিশ্বাস করি, নারীবাদ নারীর একলার ইশ্যু না। আমি বিশ্বাস করি নারীকে (এবং একই সাথে পুরুষকেও) তার লিঙ্গ নির্ভর দায়িত্ব থেকে মুক্ত করা সম্ভব হলেই নারীমুক্তি (এবং একই সাথে মানবমুক্তি) ঘটবে। আমি বিশ্বাস করি নারীর প্রতি বৈষম্য এবং নির্যাতন শুধু লৈঙ্গিক পুরুষের মারফত হয় না। ব্যক্তি পুরুষকে আমার প্রতিপক্ষ ভেবে, শত্রু ভেবে, আলাদা ভেবে আমার ভাণ্ড বাটি আলাদা করে আমবাগিচার তলায় একলা একলা চড়ুইভাতি খেলাধুলায় আমি তাই নাই।
তাই নারীবাদ ‘কী’ জিনিস, তা যদি আবার এক লক্ষ বারের মত বলতে হয়, তাহলে বলবো, নারীবাদ হলো শুধুমাত্রই নারী ও পুরুষের সমান অধিকার আদায়ের আন্দোলন। এবং এই আন্দোলনের অর্থ এই না যে নারীকে পুরুষের সমান বা পুরুষকে নারীর সমান হয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলনের অর্থ এই না যে পুরুষ যা করেন, যেমন- রাস্তায় দুই ঠ্যাং দুই দিকে দিয়ে দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগের মত অসভ্যতা; বা নারী যা করেন, যেমন- দুই ঠ্যাঙ্গের মাঝখান দিয়ে শিশু জন্ম দেন, তা একে অপরকে করে দেখাতে হবে। আর তাই নারীবাদের সাথে সিগারেট বা মদ গাঁজা ইয়াবা খাওয়া বা ছেলেদের পোশাক পরার কোনো সম্পর্ক নাই।
এই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে শারীরিকভাবে নারীকে নারী ও পুরুষরে পুরুষ রেখেই এবং একে অপরের শারীরিক (এবং সেই সূত্রে মানসিক) পার্থক্যকে হিসাব করেই দুইজনের সমান অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।
নারীবাদ তাই নারীদের পুরুষের সমকক্ষ হওয়ার আন্দোলন না। নারীবাদ পুরুষের বিরুদ্ধে পুরুষ নিশ্চিহ্ন করার আন্দোলন না। নারীবাদ শুধুমাত্রই ‘পুরুষতন্ত্রের’ বিরুদ্ধে আন্দোলন।
এই পুরুষতন্ত্র অর্থও ব্যক্তি পুরুষ না। পৃথিবীর প্রচুর পুরুষ পুরুষতান্ত্রিক না। পৃথিবীর প্রচুর (বলা ভালো বেশিরভাগ) নারী পুরুষতান্ত্রিক। জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে উচ্চবিত্ত মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নবিত্ত শ্রেণির নারীরাও পুরুষতান্ত্রিক হতে পারেন।
আর এই পুরুষতন্ত্র হচ্ছে এক প্রকার সামাজিক এবং সেই সূত্রে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। পুরুষতন্ত্র এক প্রকার আগ্রাসী, সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতি যা রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নৈতিক কর্তৃত্ব, সামাজিক অধিকার ও সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। এবং আজকের আধুনিক পুঁজিবাদের সাথে সাথে হাত ধরে হাঁটা নিওলিবারেলিজমের যুগে শুধু নারী না, পুরুষ সহ মানুষের বৌদ্ধিক-শারীরিক শ্রম, মানুষের ঈশ্বরে বিশ্বাস-অবিশ্বাস, মূল্যবোধ, সামাজিকতা থেকে শুরু করে পৃথিবীর সবকিছুই মাল্টিন্যাশনাল বেণিয়ার পণ্য। সবইকিছুই বাজার। নারীবাদ এই বাজার সংস্কৃতির বিরোধিতা করে। নারীবাদ বলে নারী সহ পৃথিবীর কোনো মানুষকেই বাজারী পণ্যে রূপান্তর করা ধৃষ্টতা। আর তাই পুঁজিবাদের এই সংকট যদি এখনও মানুষ বুঝে উঠতে না পারেন, এখনও নিজের গায়ে নারীবাদের তকমা লাগাতে লজ্জা পান, এখনও নারীবাদ কী জিনিস, তা খায় না মাথায় দেয় না পেটে ঘষে মার্কা হাস্যকর কথা বলে কুযুক্তি উপস্থাপন করে নারীবাদ বাতিল করতে চান, তাদের জন্য কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার একটা সিস্টেম্যাটিক এ্যাপ্রোচ হতে পারে, যা এখনও পণ্যে পরিণত হয় নাই, সেই ভালোবাসা, মমতা, স্নেহর মত মানবিক বৈশিষ্ট্যসহ নিজের যোণী, নিজের স্তন থেকে শুরু করে নিজের সম্পূর্ণ শরীরকে স্বেচ্ছায় বাজারজাত করে ফেলা।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে আরো বহুকিছুর সমাধান এখনও বাকি আছে নিশ্চয়ই, যেখানে বাংলাদেশের অধিকাংশ ১৫ ও এর উর্ধ্ববয়সী মেয়ের স্বাক্ষরতার হার মাত্র ৪০.৮ শতাংশ, উচ্চ মাধ্যমিক ও তৎপরবর্তী শিক্ষায় নারীর ভর্তি হার মাত্র ৪ শতাংশ, এবং দরিদ্রতা, পারিবারিক অনীহা, ধর্মীয় কুসংস্কার সহ সামাজিক নিরাপত্তাজনিত কারণে বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে শতকরা ৪১ ভাগ মেয়েকে স্কুল ত্যাগ করতে হয়, সেখানে পুরুষতন্ত্রকে ভাঙ্গতে যৌনতার মত বিষয়কে পণ্য বা বাজারজাত করে তোলার এহেন ‘আবদার’ অনেকক্ষেত্রেই ইয়োটোপিয়ান, অবাস্তব, অদরকারী, নীতিবর্জ্জিত, ‘ইংরাজি ছাঁচে ঢালা অপশিক্ষার ঝকমারি ফলাফল’ বলে মনে হতেই পারে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, পশ্চিমা নারীবাদকে যেমন খুব সহজভাবে ক্রনোলজি ধরে ফার্স্ট ওয়েভ, সেকেন্ড ওয়েভে ভাগ করা যায়, বাংলাদেশ সহ উপমহাদেশ অঞ্চলে তা সম্ভব না। ভূমি ও কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলের নিজস্ব চরিত্র আছে, এবং যেকারণেই এই অঞ্চলে একইসাথে একই টাইমলাইনে পুরুষতান্ত্রিকতার প্রতি আনুগত্য দেখা যায়, পুরুষতান্ত্রিকতার বিপক্ষে প্রবল প্রতিরোধও দেখা যায়। আর সেকারণেই এই অঞ্চলে ইউনিল্যাটেরালি নারীবাদের প্রসার সম্ভব না। আর সেকারণেই এই অঞ্চলে এখনও কামাতুর পুরুষের দৃষ্টিপথ আর ‘খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক’ আর ‘পতি ধর্ম্ম পতি কর্ম্ম, পতি সারাৎসার’ মার্কা কুযুক্তির বলয় থেকে একশ’ একুশবার ‘কন্যপ্যেবং পালনীয়া শিক্ষণীরাতিযত্নতঃ’ যপতে যপত আমাদের বালিকাগণকে রক্ষা করার পাশাপাশিই এই পুঁজিবাদের বাজার সংস্কৃতির বিরোধিতায় নিজেকেই নিজে ‘বাজারী’ করে তুলে পুরুষতন্ত্র আর পুঁজিবাদ আর ধর্ম আর সমাজের সমস্ত ডগম্যাটিক টার্ম ভেঙ্গে দিয়ে তার অসাড়তা সিস্টেম্যাটিক্যালি প্রমাণ করতে হবে।
হয়তো তা করা হলেই মানুষ একদিন বুঝতে পারবেন, এতদিন ধরে তারা কী উলটা রাস্তায় হেঁটে এসেছেন। হয়তো এই র্যাডিকাল সমাধানের মাধ্যমেই মানুষ টের পাবেন, উন্নয়ণের নামে পুঁজিবাদী বাজারের সর্বগ্রাসী প্রতিষ্ঠানে মানুষ নিজেকে কীভাবে যন্ত্রে পরিণত করেছেন গত চার হাজার বছর ধরে। হয়তো পুরুষতন্ত্রের এই ‘থিসিস’এর বিপরীতে হেগেলিয় এক্সট্রিম ‘এ্যান্টিথিসিস’ তৈরি না হলে নারী পুরুষ ইন্টারসেক্স সকল মানুষের সম্মিলিত শক্তিতে সাম্যের পৃথিবী, ভালোবাসার পৃথিবী, যুদ্ধহীন পৃথিবী, ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী, শ্রেণিমুক্ত পৃথিবী, বাধ্যতামূলক শ্রমবিভাজনহীন পৃথিবী, দারিদ্রমুক্ত পৃথিবী, উদ্বৃত্ত সময়হীন পৃথিবী, মানবিক পৃথিবী তৈরি করা সম্ভব হবে না।
তাই জয় হোক নারীবাদের। তাই দীর্ঘজীবি হোক বিপ্লব। তাই পুরুষতন্ত্রের ঠাসঠাস ককটেল নৃত্য দেখে হতাশ হবেন না। তাই প্রতিরোধ চলুক।
তাই সব্বে সত্তাঃ নারীবাদিতা ভবন্তুঃ
তাই জগতের সকল প্রাণী নারীবাদী হোক
(হিহি!)
Nadia Islam was born in Libya in 1985. She studied fashion design, forensic science, and genetic engineering in London, UK. She is currently working and living between Bosnia and Russia. She is a vegan, agnostic, and feminist in personal-social life. Her passions include parallel world, Indian classical and heavy metal music, conspiracy theories, fictional novels, going green movement, scuba diving, painting, theology, writing, and cat-cafes.
প্রিয় নাদিয়া
আপনার লেখাটি পড়লাম। অনেক ভালো লিখেছেন। আশা করছি অনেকেই এই লেখাটি থেকে উপকৃত হবেন।
ধন্যবাদ।
লেখাটি পড়ে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করবেন।অনেকে বাজে বাজে কমেন্ট করে যাবে।কিন্তু কেউ জিনিসটা গভীরভাবে চিন্তা করবে না।অনেকে পড়বেও না।নারীবাদ লেখাটা দেখেই খারাপ মন্তব্য করা শুরু করে দিবে।অশিক্ষিতদের যেইটা কাজ।
❝জগতের সকল প্রাণী নারীবাদী হোক❞
আপনার প্রত্যেকটা লেখার আমি ভীষণ অনুসারী। অনুপ্রানিত করেন আমাদেরকে।
ধন্যবাদ।