অপরাধে জড়িত বলেই বাউল শরিয়তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
প্রায় ছয় মাস যাবত বাউল শরিয়ত সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জেলে বন্দী আছেন। সংবাদমাধ্যমের মারফতে জানা যাচ্ছে, বাউলের পরিবার এই করোনাকালে যেমন আর্থিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন মহলের ক্রমাগত হুমকি-ধামকির মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে। তারা এই মামলার খরচ টানতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ৯ জানুয়ারি (২০২০) তারিখে বাউল শরিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করা হয়; ১১ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মির্জাপুর থানা পুলিশ; এবং ১৪ জানুয়ারি তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়। বাউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে; বলা হয়েছে যে, বাউল বলেছিলেন, গান-বাজনা হারাম বলে ইসলাম ধর্মে কোনো উল্লেখ নেই। কেউ প্রমাণ দিলে তিনি গান ছেড়ে দেবেন। এমন বক্তব্য শুনেই বাদী মামলা করেছিলেন।
বাউল কি বলেছেন? বা বাউল কি আদৌ ধর্মকে অবমাননা করেছিলেন? বা, বাউলের কথায় যৌক্তিকতা ছিল কি না বা তার জামিন সংক্রান্ত কোনো ধরণের আলাপে আমরা প্রবেশ না করে বরং বাউলের ঘটনাকে একটা বিশেষ বিষয়ের কেসস্টাডি হিসাবে পাঠ করতে চাই: বাংলাদেশ রাষ্ট্রে সাংবিধানিক বাকস্বাধীনতার অস্তিত্বের স্বরূপ চিহ্নিত করতে এবং সংবিধানের এই স্বাধীনতা সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে (৩৯ নং) যে প্যারাডক্স হাজির আছে তা তুলে ধরতে।
বাউল শরিয়তকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন মূল প্রশ্নটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ঘিরে তৈরি না হয়ে বরং শিল্পী-বাউল-গান-বাজনার উপর আঘাতই মূল প্রশ্ন হিসাবে হাজির হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সরকার সমালোচকদের গণ-গ্রেফতার বা গণ-মামলার অভিজ্ঞতা এই আইন এবং বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে মূল প্রশ্ন হিসাবে হাজির করেছে। আন্দোলনে তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলই মূখ্য দাবি।
যারা এই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এমন মতও পোষণ করেন যে, বাংলাদেশের সংবিধান বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। অভিজ্ঞতা বলে যে, প্রগতিশীল রাজনীতি চর্চায় জড়িতদের সিংহভাগই সংবিধান প্রদত্ত বাকস্বাধীনতায় গভীর আস্থা প্রকাশ করেন। ফলে, অনেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সংবিধানের পরিপন্থী বা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বলে দাবি করছেন। কিন্তু, এই আমরা বলতে চাচ্ছি যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে মামলাগুলো করা হচ্ছে সেগুলোকে সাংবিধানিকভাবেও ‘বৈধ’ চিহ্নিত করা সম্ভব। মানে, আদতে এগুলো যে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক না সেটা প্রমাণ করা সম্ভব। উল্টো সংবিধানের দেখানো পথেই এগুলো হাসিল করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যে বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পথকে রুদ্ধ করে দেয় তার প্রমাণ দেয়াটা এই মুহূর্তে বাহুল্যই হবে; বিস্তর লেখাপত্র অনলাইন-অফলাইনে রয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদে মূলত বাকস্বাধীনতা সংক্রান্ত আলাপ রয়েছে। এই অনুচ্ছেদের নামকে দুইভাবে ভাগ করা যায়: ১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, ২) বাক স্বাধীনতা। ‘ভাব-প্রকাশের স্বাধীনতা’ এবং ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা’ দুটোকে বাক-স্বাধীনতার মধ্যেই ফেলে দেয়া যায়।
সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের প্রথমেই কোনো বিধিনিষেধ বা ‘সাপেক্ষে’ ছাড়াই ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান’ করা হয়েছে। কিন্তু বাকস্বাধীনতা, ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে এভাবে নির্বিঘ্নে ছেড়ে দেয়া হয়নি। বরং একটা বিরাট বাক্যের অধীনে এই স্বাধীনতাগুলোকে শর্তায়িত করে রাখা হয়েছে। শর্তগুলো হলো, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে…’
এই অনুচ্ছেদ খেয়াল করে পড়লে বোঝা যাচ্ছে, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা দেয়া হলেও বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বেড়াজালে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো, বাক স্বাধীনতা ছাড়া চিন্তার স্বাধীনতা আদৌ কি কোনো অর্থ বহন করে? ধরুন, আমি একটা বিষয় নিয়ে চিন্তা করছি,কিন্তু যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই চিন্তাকে ভাষার মাধ্যমে হাজির করতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত সেই চিন্তা কি আদৌ ‘চিন্তা’ হয়ে উঠতে পারবে? বা পেরেছে বলে কি আমি নিশ্চিত হতে পারি? উদাহরণস্বরূপ এই লেখাটার কথাই ধরা যাক। আমি সংবিধানের একটা ধারার প্যারাডক্স নিয়ে চিন্তা করছি, কিন্তু আমি যদি সেটা মৌখিক বা লিখিত রূপে ভাষার মধ্যে দিয়ে হাজির করতে না পারি তাহলে সেই চিন্তার অস্তিত্ব তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই চিন্তার থাকা বা না থাকাটা কি তখন তাৎপর্য বহন করে? চিন্তা বা চিন্তার বিষয়বস্তু পরীক্ষিত বা পরিশীলিত বা যুক্তির কঠিন ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য বা এমনকি ভুল প্রমাণিত হওয়ার জন্যও সেই চিন্তাকে প্রকাশ ঘটাতে হবে। সংবিধানের যে বিষয়টা আমার কাছে প্যারাডক্স মনে হচ্ছে, সেটা আমার বুঝতে ভুলও হতে পারে, সেটা নিয়ে বিস্তর তর্ক-বিতর্ক হতে পারে, কিন্তু সেই তর্ক-বিতর্ক তো হবে চিন্তার প্রকাশ ঘটার পর। মানে, মত প্রকাশের পর।
জে. বি. বিউরি যখন ‘চিন্তার স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস’ লিখা শুরু করেন, তখন একেবারে গোড়াতেই ঘোষণা দেন, চিন্তার স্বাধীনতার ইতিহাস আসলে বাক স্বাধীনতারও ইতিহাসও বটে। ‘কথা বলার স্বাধীনতা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া চিন্তার স্বাধীনতা কোনো অর্থ বহন করে না’।
বিষয়টা তাহলে দাঁড়ালো এই, আমাদের সংবিধান বলছে আপনি চিন্তা করতে পারবেন স্বাধীনভাবে, কিন্তু সেই চিন্তার প্রকাশ করার বেলায় আপনি পরাধীন, শর্তায়িত। যে শর্তগুলোর কথা সংবিধানে সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছে, মানে যেসব ব্যাপারে আপনার বাকস্বাধীনতা সীমিত সেগুলো হচ্ছে, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা’, ‘বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ , ‘জনশৃঙ্খলা’, ‘শালীনতা’ বা ‘নৈতিকতা’ ইত্যাদি।
উপরে উল্লিখিত বাউল শরিয়তের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে ‘জনশৃঙ্খলা’ ও ‘নৈতিকতা’ এই দুটোর সাপেক্ষে বিবেচনা করতে পারি। ‘নৈতিকতা’ সবসময়ই নির্ধারিত হয় মূলধারার বয়ান অনুযায়ী। প্রমিন্যান্ট ডিসকোর্সই মূলত ঠিক করে দেয় কোনটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক। এটা একেবারেই স্থান-কাল-ধর্ম-আচার-ক্ষমতা সাপেক্ষ। বাউল শরিয়ত বলেছেন ইসলামে গান বাজনা হারাম নয়; দাবি করা যেতেই পারে, বাউলের এই উক্তি এখনকার বিদ্যমান ইসলামের প্রমিন্যান্ট ডিসকোর্সের সাথে খাপ খায় না। বাংলাদেশের অধিকাংশ ধর্মীয় পণ্ডিতরা মনে করেন, গান বাজনা হারাম। ইসলামি জগত ও দর্শনে এ নিয়ে বিস্তর জ্ঞানতাত্ত্বিক তর্ক-বিতর্ক থাকলেও সেটা এখানে একেবারে ‘গৌণ’ হয়ে পড়ে, কারণ ‘নৈতিকতা’ সর্বত্রই নির্ধারিত হয় মূলধারা ও ক্ষমতার ইচ্ছাধীন। একইভাবে যখনই কেউ কোনো সামাজিক ট্যাবু ভাঙ্গতে চান বা যান বা সেই ট্যাবু নিয়ে কথা বলতে যান তখনও একইভাবে মূলধারার ‘নৈতিকতা’র মানদণ্ডে আটকা পড়তে পারেন। সাম্প্রতিক সমকামিতা সংক্রান্ত আলাপও এখানে ‘নৈতিকতা’ বা ‘শালীনতা’র বেড়াজালে বন্দী হতে পারে। সেটা খুব সহজেই ধর্মীয় অবমাননা বা বিভিন্নধরণের অনুভূতিসংক্রান্ত ফ্যাসাদের দিকে ধাবিত হতে পারে। মানে, নৈতিকতা ও শালীনতার ‘স্বাপেক্ষে’ কখনোই মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায় না। দেখা যাচ্ছে, বাউলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে আনীত অভিযোগ যে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক নয় সেটা প্রমাণ করা সম্ভব।
‘নৈতিকতা’র সাথে কীভাবে ‘জনশৃঙ্খলা’ মিশে যেতে পারে তার একটা ধ্রুপদী উদাহরণও হচ্ছে শরিয়ত বাউলের ঘটনা। বাউলকে রিমান্ড শেষে জামিন না দিয়ে জেলে পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ; বলা হয় যে, ‘আসামী জামিনে মুক্তি পাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে এবং … সমাজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে’। সমাজে চালু থাকা কোনো মতের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতানুসারী কর্তৃক ‘জনশৃঙ্খলা’ বিনষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকায় আপনার মতকে কাটছাঁট করেই প্রকাশ করতে হবে, আর নাহলে মত প্রকাশকে দমন করতেই হবে। আর এই ক্ষেত্রে, বাউল যে অপরাধ করেছেন তার সার্টিফিকেট দিয়েছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতাতন্ত্রের একেবারে চূড়ায় বসে থাকা ব্যক্তিটি। (তার নাম জপেই অত্র লেখার সূচনা হয়েছে।)
সহজ কথা হচ্ছে, ‘শালীনতা’ বা ‘নৈতিকতা’ ধারণাগুলোর ব্যাখ্যা এত বিস্তৃত এবং ক্ষমতা ও সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনযোগ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ছয়মাস পূর্বের বাউল শরিয়ত বা এই সময়ের সিরাজাম মুনিরা, তারা যে সংবিধানের বরখেলাপ করেছেন, তা শালীনতা বা নৈতিকতার বিস্তৃত ব্যাখ্যা দিয়ে প্রমাণ দেয়া সম্ভব।
পাশপাশি, এটা সহজেই অনুমান করা যায় যে, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা’, বা ‘বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ এর মতো বাক্য বাকস্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে। যেমন, একজন গবেষক চিন্তা করলেন তিনি ভারতের সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটা গবেষণা করবেন। তিনি সেই গবেষণার চিন্তা করতেই পারেন, কেননা তিনি চিন্তায় স্বাধীন। কিন্তু, এখন ভারত যেহেতু আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র গবেষকের সেই চিন্তার বহিঃপ্রকাশ বা গবেষণা প্রকাশিত হলে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। বা, কোনো সংবাদপত্রে এমন কোনো রিপোর্টের বেলায় আমাদের রাষ্ট্র মনে করতেই পারে যে, এই রিপোর্ট প্রকাশিত হলে সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। তখন আপনি সংবিধানের বেড়াজালে আটকা পড়ে গেলেন, আপনার গবেষণা তখন অ-সংবিধানিক।
ফলে এটা বলা যায় যে, বাংলাদেশের সংবিধান আসলে ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করলেও সেই চিন্তাকে প্রকাশ করার স্বাধীনতা (মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা) নিশ্চিত করে নি। তাই বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হিসাবে দেখার যে জনপ্রিয় মত চালু আছে সেটা আসলে কোনো অর্থ বহন করে না।
‘চিন্তা’র সাথে ‘চিন্তাকে হাজির করা’র মধ্যে যে দেয়াল তুলে দেয়া হয়েছে সেটা আসলে একটা জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত চিন্তাকে, চিন্তার সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়। চিন্তা আসলে কোনো ‘ব্যক্তি’র বিষয় নয়, এটা আসলে ‘কালেক্টিভ’ বিষয়। তাই জ্ঞান উৎপাদন ও চর্চাও আসলে ‘কালক্টিভ’ বিষয়। আমার চিন্তা বহু জনের চিন্তার সাথে মিলবে, বহুজনের চিন্তা আমার চিন্তার সাথে মিলবে, মোলাকাত করবে, পরীক্ষা দিবে, খারিজ হবে, গৃহীত হবে – এমন বহু যৌথ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই আসলে চিন্তাচর্চা এগিয়ে যায়। কিন্তু এই সব ‘কর্মকাণ্ড’ কেবল তখনই সম্ভব হবে যখন সেই চিন্তাকে হাজির করার স্বাধীনতা বজায় থাকবে। এটাই আসলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। এটাই আসলে বাক স্বাধীনতা। এটাই এর ফজিলত।
বর্তমানে যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জন্য জোরেশোরে আওয়াজ উঠছে, তখন আমাদের এও মনে রাখা উচিৎ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের মাধ্যমেই আমাদের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত হয়ে যাবে না। খোদ আমাদের সংবিধানেই এই স্বাধীনতার নিশ্চয়তা নেই। তাই, আমাদের দীর্ঘমেয়াদি দাবি তুলতে হবে সাংবিধানিকভাবে আমরা বাকস্বাধীনতা চাই। নিঃশর্ত কথা বলার অধিকার চাই। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে যে, কোনো আইনের বিরুদ্ধে জনমত ফুঁসে উঠলে এটাকে সংশোধন করে আরো বেশি নিপীড়নমূলক আইন বানানো হয়। ফলে, এমন গণবিরোধী আইন তৈরির যে কাঠামো চালু আছে খোদ সেটাকেও আমাদের বদলাতে হবে। অন্যথায়, গণ-আন্দোলনের মুখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হলেও সেটা আরো নয়া নয়া রূপে ফিরে আসবে।
Sohul Ahmed, activist and author. Topics of interest are politics, history, liberation war and genocide. Published Books: Muktijuddhe Dhormer Opobabohar (2017), Somoyer Bebyocched (2019), and Zahir Raihan: Muktijuddho O Rajnoitik Vabna (2020)