প্রশ্নোত্তর:
শুদ্ধস্বর: কবিতা লিখতে হবে বা কবিতা লেখার জন্য তাড়না বা বোধের ব্যাপারটা প্রথম কীভাবে অনুভব (মানসিক অবস্থা, পরিবেশ-প্রতিবেশের সাথে সংশ্লেষ) করতে শুরু করলেন?
ফারহানা আনন্দময়ী: লেখালিখির শুরুর গল্পটা যদি বলতে হয়, তো বলবো, লিখতে লিখতে প্রথম লেখা নয়; বরং পড়তে পড়তে লিখবার আগ্রহ জাগা। আর মূলত চিঠি লেখবার নেশা থেকেই লেখালিখিতে আঙুলের আড় ভাঙা। প্রচুর কবিতা পড়তাম, গল্প-উপন্যাসও- তখন বয়স দশ/এগারো হবে, সাহিত্যের মজা পেতে শুরু করলাম। বাড়ির আবহ-ও ছিল এর উপযোগী। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি কথা, “সুন্দর ছোটবেলা বড়োবেলার অ্যাডভান্স টিকেট।“ তাই-ই হলো। কবিতা নেশার মতো টেনেছিল। স্কুল-কলেজের পত্রিকায় লেখা- সে একরকম। কিন্তু আরো বেশি পরিণত বয়সে, গভীর বোধ থেকে যখন কবিতা এলো, তার ব্যঞ্জনা অন্যরকম। কবিতা লিখতে পারলেই কবি- বিষয়টি তো মোটেই তা নয়। তাই কবিতা লিখতে হবে, এই তাড়া কবির মধ্যে থাকে না। নিভৃতির অন্বেষণ একমাত্র কবিতা লেখার তাড়না দেয়।
শুদ্ধস্বর: আপনার কবিতার সমসাময়িকতা, রাজনৈতিক বোধ, নিজস্ব ভাষাশৈলীর বিষয়গুলো যতটুকু সম্ভব বিস্তারিত ভাবে শুনতে আগ্রহী।
ফারহানা আনন্দময়ী: নিজস্ব ভাষা শৈলীর বিষয়ে বলতে গেলে প্রথমেই যে শব্দটা মগজে অণুরণিত হয়, তা হলো, সহজিয়া। আমার কবিতার ব্যক্তিত্বে এই রূপটা খুব স্পষ্টভাবে মূর্ত হয়ে ওঠে। কবিতাভাষাটি এমন হওয়া চাই, যা অন্য একজন মানুষ সহজে সংযুক্ত হতে পারেন। আমার ব্যক্তি আমিটা যা বলতে পারি না, যাপনে স্বীকার করতে পারি না- তা হয়তো কবিতার মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়। কবিতা আমাকে সেই স্বাধীনতা দেয়। ইচ্ছেরা চায়, আমার কবিতা যেন পাঠককেও সেই স্বাধীনতা দেয়। হোক সে স্বাধীনতা কাল্পনিক- আর সেই স্বাধীনতা উপভোগ করবার জন্য সহজিয়া ভাষার চেয়ে প্রিয় বিকল্প আর কী হতে পারে?
সমসাময়িক না হলে কোনো শিল্পই টেকসই হয় না। সমসাময়িক বলতে আমি সাম্প্রতিক সময়ের চেয়ে আধুনিকতাই বেশি বুঝি। ভাবুন, রবীন্দ্রনাথ প্রায় একশত বছর আগে লিখেছিলেন ‘রবিবার’ গল্পটি। ওঁর ভাবনার আধুনিকতা সেই পর্যায়ের ছিল, এই গল্পের মূল চরিত্র অভীক ছিল একজন নাস্তিক মানুষ। সেই নাস্তিকতাকে কবি এক শতাব্দী আগেও কী ঔদার্য নিয়ে, কী মাধুর্যে প্রকাশ করতে পেরেছেন! তো একে আমরা কী বলবো, এর চেয়ে সমসাময়িক আর কিছু হয় না আজকের পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে। আর সমসাময়িকতার অন্যতম মূল শর্ত হলো রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়া। এই সচেতনতা না থাকলে কবিতার যে সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে, তা পূরণ করা কঠিন হয়ে ওঠে। আমার লেখা কবিতায় রাজনীতির দর্শন খুব স্পষ্টভাবে চিহ্নিত না হলেও, রাজনীতি সামনে চলে আসে সমাজনীতির একটা চেহারা ধরে। তার মধ্যে মানবতা, তার মধ্যে ব্যক্তি স্বাধীনতা, তার মধ্যে বাক স্বাধীনতা, তার মধ্যে ধর্মান্ধতার বিপরীতমুখে অবস্থান, তার মধ্যে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধতা করা- এ সমস্তই ঘুরে ঘুরে এসেছে।
শুদ্ধস্বর: কবিতার শ্লীল অশ্লীল ব্যাপারগুলো সম্পর্কে আপনার ধারণা ও অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
ফারহানা আনন্দময়ী: শ্লীল-অশ্লীল শব্দটি একেবারেই আপেক্ষিক, বিশেষ করে শিল্পে, সাহিত্যে। কবিতায় একে কোনো শব্দের সীমানায় নিরুপন করা যায় না বলেই মনে হয়। আর কবিতায় শ্লীলতা কিংবা অশ্লীলতা দুটোই শতভাগ নির্ভরশীল তা উপস্থাপনের ওপরে। আর তার সাথে যুক্ত হয় পাঠকের দৃষ্টিকোণ। শব্দপ্রয়োগের সীমা আর সীমানাটা ভালো জানা থাকলে কবিতায় অশ্লীলতাও কখন যেন কাব্যিক হয়ে ওঠে। বেশিরভাগ টাইপের বেশিরভাগ মানুষেরা আদতে যৌনতাকে কেন্দ্র করে শ্লীল-অশ্লীলতার বৃত্তে পাক খেতে থাকে। যৌনতা ছাড়াও তো ব্যক্তিগত, সামাজিক, এমন কি রাষ্ট্রীয় যাপনের অন্যান্য অনেক বিষয় আছে যা অশ্লীল!
শুদ্ধস্বর: বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের বাংলা কবিতা নিয়ে আাপনার নিজস্ব মূল্যায়ন/বিশ্লেষণ জানতে চাই। এটা যে-কোনো সময় ধরে হতে পারে,আপনার যেমন ইচ্ছে।
ফারহানা আনন্দময়ী: বাংলা কবিতা তো বাংলা কবিতাই। বাংলাদেশ আর পশ্চিম বঙ্গের বাংলা কবিতা ব’লে পৃথকভাবে ভাববার অবকাশ কম। তবে সমসাময়িক কবিতার কথা যদি বলি, বেশ ক’জন শক্তিমান কবি দু’বাংলাতেই লিখছেন। কবিতার গতিপথ, ভাষাপ্রয়োগ, আঙ্গিক কাছাকাছি হলেও একটা ক্ষেত্রে পশ্চিম বঙ্গের বাংলা কবিতার কথনস্বরে প্রতিবাদের দ্যুতি তীব্র। শাসক বা রাষ্ট্র কিংবা সমাজের অনাচারের বিরুদ্ধে তাদের কবিতা বাংলাদেশের কবিতার চেয়ে অনেক বেশি সোচ্চার। আর পশ্চিম বঙ্গের বাংলা কবিতা কেবল কলকাতাকেন্দ্রিক কবিদের নিয়ে চর্চিত নয়। দূর মফস্বলের শক্তিমান কবিতার কবিরাও সমানতালে প্রচারে-প্রসারে থাকতে চেষ্টা করেন।
শুদ্ধস্বর: খুব সাম্প্রতিক সময়ে আপনার পাঠ অভিজ্ঞতা (যে কোনো বই বা লেখা) নিয়ে কিছু বলুন।
ফারহানা আনন্দময়ী: সাম্প্রতিক সময়ে পাঠ করা হলো ২০২১ এর সাহিত্য একাডেমি যুব পুরস্কার প্রাপ্ত উপন্যাস ‘আ বার্নিং। মেঘা মজুমদার লিখেছেন ইংরেজিতে; কলকাতার প্রেক্ষাপটে লেখা তার ডেব্যু উপন্যাস। উপন্যাসটি যখন পড়েছিলাম, এই কয়েক মাস আগে- আলাদা টানে টেনেছিল।
আ বার্নিং… তিনটি চরিত্রকে ঘিরে এই উপন্যাসটি আবর্তিত হয়েছে। বস্তিবাসী একজন মুসলিম তরুণী, নাম তার, জীবন- ট্রেনে সন্ত্রাসী হামলায় ঘটনাক্রমে জড়িয়ে যায়, নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও। পিটি স্যার- সুযোগসন্ধানী একজন শিক্ষক, ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে জীবন এবং যাপনে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য যিনি মরিয়া। আর একজন লাভলি- এই ট্রান্সজেন্ডার মানুষটি সংগ্রাম ও আপোসের পথ ধরে রঙিন রিলে জীবনকে রিয়েল জীবনে মেলাবার উচ্চাকাঙ্ক্ষায় মগ্ন। চরমপন্থার দিকে ঝুঁকতে থাকা একটি রাষ্ট্রে সমাজের শ্রেণিবিভক্তি, অসাম্য, দুর্ণীতি, অবিচার আর এসবের সাথে লড়াইরত সাধারণ মানুষের অসহায়তা-অক্ষমতা এবং তা সত্ত্বেও কারো কারো অপ্রতিরোধ্য স্বপ্নকে লালন করা চলা… এসবই একে একইসঙ্গে ভাবনায় ঝড়-তোলা এবং হৃদয়স্পর্শী শান্ত উপন্যাসে রূপ দিয়েছে।
সমসাময়িক ভারতের সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, বৈষম্য মেঘা মজুমদারকে ক্রুদ্ধ ও বেদনাহত করে। পরিস্থিতির অন্য পিঠ তো পাকিস্তান আর বাংলাদেশ। আফগানিস্তানও যে আমাদের খুব দূরের দেশ, তাও নয়। কলকাতা তো ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’। সব মিলিয়ে আ বার্নিং আমাদের সময়েরই এক করুণ আখ্যান। বর্তমান সময়ের ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির এক কদর্য রূপকে চাক্ষুষ করার জন্য ‘আ বার্নিং’ পাঠ করা আবশ্যক।
কবিতা:
আয়না পোশাকের মানুষটা
অন্য সকলে যখন তাদের দৃষ্টি লুকাতে ব্যস্ত
আমি তখন গাঢ় দৃষ্টিতে দেখছিলাম মানুষটিকে,
অপলক এক দৃষ্টিহীনতায়।
কোন এক অজ্ঞাত কারণে একবারও তাকে মনে হয়নি
ধূলিবসন উন্মাদ কিংবা ভিক্ষা ব্যবসায়ী,
গাঢ় দৃষ্টিতে দেখছিলাম
উদাসীন পৃথিবীর নির্লিপ্ত বাসিন্দা
আয়না পোশাকের মানুষটাকে।
বিচ্ছিন্ন মেঘের মতো এতো বিষন্ন উলঙ্গ মানুষ
আগে কখনো দেখিনি…
একটু টোকা দিলেই যেন শরীর বেয়ে ভাঙবে নদী।
আমি পারি, নদীর মতো উৎস থেকে সঙ্গমে যেতে।
তাকে দেখে মনে হলো, সে-ই পারে
সঙ্গম থেকে উৎসে ফিরতে।
কেন মনে হলো, সেই প্রশ্ন কোরো না।
জানতে চাইলাম, তুমি কি কখনো
কবিতার কেউ ছিলে, কিংবা বিষাদের ?
বললো, কবি কেন বোঝনা…
জীবন কোন মায়াবী কবিতা নয়,
নগ্ন অক্ষরে লেখা এক সত্যভাষণ প্রবন্ধ।
এই প্রথম জানা হলো, বোঝা হলো
আদিম অমাবস্যাও মাঝে মাঝে আলো দেয়,
সুসভ্য রোদ যা দেয়…
তার চেয়েও খানিকটা বেশি।
আরো আলো আরো আলো
গ্রহণের কাল আজ, পৃথিবীর নিয়ত ক্ষয়
অযুত অকল্যাণ আর অপ্রতিরোধ্য অসভ্যতায়।
বিশ্ব বিষণ্ণ, তার সন্তানেরা অবসন্ন
সকলের চোখে শূন্যদৃষ্টি, মগজ অচল
রোগ সারবে কিসে ? কোন্ মন্ত্রে?
কবিতা, এসো… করো ত্রাণ, ডুবাও প্রেমে,
ভাসাও আলোয়।
সভ্যতাকে বলো, সভ্য হও, রোদ্দুর ভালবাসতে শেখো।
ক্ষমতাকে বলো, নিঃস্ব হও, হও তারাতে ঐশ্বর্যময়।
শাসনকে বলো, আলগা হও, দখিনা আসুক খোঁয়াড়ে খাঁচায়।
নিপীড়নকে বলো, ক্লান্ত হও, শ্বাস নিক মানবতা,
প্রাণ হোক প্রাণময়।
গ্রহণের কাল কাটবে? অপুষ্পক দিনে ফুল ফুটবে আদৌ ?
মুক্তি, এসো… করো ত্রাণ,
গ্রহণ কাটুক ভোরের কবিতায়।
কবিতা কবিতা খেলা
কাঁটাগাছ দুপুরের হাতে
ডানাকাটা একাকীত্বের কলম
সঙ্গীসন্ধানে খোঁজ পায় কবির…
ডেকে বলে, এসো খেলি কবিতা কবিতা খেলা।
অকরুণ দুপুর সময়সমুদ্রে লিখে যেতে চায়
মায়াবতী কবিতা,
এক দুপুরেই লেখা হয় একহারা জীবন।
উল্টোনো নৌকার বিষন্ন কালিতে কলম ডুবিয়ে
এগিয়ে যায়
উদাসীনতার পদ্য, ভালবাসাহীনতার কাব্য।
আদরগুলো পুড়ে পুড়ে ছাই হয় মেজাজী রোদ্দুরে,
সন্তর্পণ জখমে দুপুরকবিরও ইচ্ছে করে
শুন্যতাকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিতে,
ডুবে যাক পাটাতনের নিচে, অতলে।
চৈত্রের দুপুরগুলো জেনে গেছে,
সে-ও শ্মশানের মত নিঝ্ঝুম,
কবিতার হাত ছুঁয়েও কবির মতই একা,
সর্বদাই পুড়ছে, সর্বদাই দূরের।
ক্ষমতামত্ত
দুঃখ রাজসিক না হলে রাজাকে ছোঁয় না
দুঃখিনী পুরাণে শুধু খোদাই হতে থাকে
মৃত্যুরও জন্ম আছে।
গাঢ় হয় বিচ্যুতির লালবর্ণ ক্ষত
ভেসে যায় অন্যায়ে ন্যায়
তলিয়ে যায় মিথ্যায় সত্য
ক্ষমতামত্তের তাতেই কী উল্লাস, কী শৌর্য!
আমাদের চিৎকারে মৃত্যু হয়ে ওঠে প্রতীক
আমরা শুনতে পাই নিস্পন্দ স্পর্ধিত স্বর
শুধু তোমার মুখ উল্টোদিকে ঘোরানো
তোমার ইশারায় প্রমাণ পেরিয়ে যায় আলোকবর্ষ।
দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া আমাদের তবু
সুর ওঠে বিস্তারে…
ক্ষমতা, কী অশ্লীল তোমার উল্লাস!
কী নগ্ন তোমার শৌর্য!
ঠিকানা
বিকেল ঘন হয় একটু একটু ক’রে
আমি এগোই
গাঢ় রঙে সন্ধ্যে নামে বিকেলের উঠোনে
আমি পৌঁছে যাই
রাত ঢুকে পড়ে রাতের জঠরে
খিল খোলার আওয়াজ পাই
ভোর ফোটার অনেক আগেই
ফোঁটায় ফোঁটায় ফুটে উঠি
কার্নিসের শিয়রে উঁকি দেয়
আলোবাসার ছায়া
নিশ্চিত হই, মহাকাল পেরিয়ে এসেও
ঠিকানা ভুল করিনি আমরা।
দয়িতার অভিশাপ
যখন চাই এক অনিবার্য ভাঙচুর-চুরমার
ভেঙে যাবে মগজের কার্ফ্যু…কবি আর কবিতার,
নখর উৎসব শেষে তখন শোকযাত্রার নীরবতা কেন ?
কবিরা কি সবাই অভিযাত্রী
মূক ও বধিরতার চূড়ায় ওঠার অভিযানে ?
আমি জানি, তোমরা নিশ্চয়ই ফিরবে স্তিমিত তর্কে।
এরপরের বার…এরপরের বর্ষায়, তোমার প্রিয় ঋতুতে
তুমি যখন খুব ঝুঁকে দেখতে চাইবে আমার নাভির অতল
এক চকিতে দেখে ফেলবো আমি
তোমার নাভির ভেতরে দগদগে জন্ম-ঘা।
তুমি যখন শুদ্ধাশুদ্ধির খেলায়
আমার নগ্ন পিঠে কবিতার শান্তিজল ছিটাতে আসবে
কবি, আমি ঠিক বুঝে নেবো তোমার অক্ষমতার হস্তসুখ।
আগামী বসন্তে তুমি যখন আবার আমাকে ডাকবে
সন্ধ্যার মেঘমালা,
দেখো নিয়ো কবি, পরদিন তোমার কবিতার খাতায়
সুখী সূর্যমুখী হাসবে না আর।
হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে কবিতাঘরের কড়ি-বর্গা-ছাদ,
মিলিয়ে নিয়ো কবি…
এই বিবস্ত্র বৈশাখে এ তোমার বান্ধবী-কন্যা-দয়িতার অভিশাপ।
রাধিকা পুরুষ
আমাকে তুমি
তোমার বয়সী সবকিছু দিতে চেয়েছিলে।
বড়ো সাধ ছিল দেবার।
এসো তবে, আমার রাধিকা-পুরুষ,
তোমাকে অঙ্গে জড়াই।
উদ্বায়ী বীজ থেকে আমার গর্ভে এসো।
তোমাকে ধারণ করি। আলো দেখাই।
লালন করি। পালন করি।
সাধ পূরণ হোক। সাধ্য পূর্ণ হোক।
এসো।
‘কুঞ্জদুয়ারে অবোধের মতো রজনীপ্রভাতে
বসে রবো কত…’
এসো। ওঠো তবে জন্মান্তরের সাম্পানে
হাওয়া লাগুক আকাঙ্ক্ষার মাস্তুলে…