প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ঘেটুপুত্র কমলা ছবিটিতে বিত্তবান জমিদার যখন দরিদ্র ঘেটুপুত্র কমলাকে তার কক্ষে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং কিছুক্ষণ পরেই কমলার ‘মা’ বলে আর্তচিৎকার শোনা যায়, তখন শুনেছিলাম হলভর্তি দর্শককেও ঘৃণা আর লজ্জায় ফিসফাস করে উঠতে। এই গুঞ্জন পরে কলরব হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল মূলধারার বিতর্কে । আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিল ছবির মূল উপজীব্য ‘সমকামিতাকে’ কেন্দ্র করে। পূর্ণবয়স্ক পুরুষ জমিদারের এক নাবালক ছেলের সাথে যৌনসংসর্গ সমকামিতারই নামান্তর এবং তা অবশ্যই নিন্দনীয়, পরিত্যাজ্য এবং ইসলামি শরিয়তে কবিরা গুনাহ – এমনটাই ছিল সবার বক্তব্য।
কেউ কেউ এমনও বলেছে যে হুমায়ূন আহমেদ এ ধরনের বিতর্কিত অসামাজিক প্রথা কমলার মতো নিরীহ নিরুপায় শিশুদের মাধ্যমে দেখিয়ে সমকামিতার প্রতি মানুষের একধরনের করুণা মিশ্রিত নীরব সমর্থন জাগ্রত করেছেন।
এর বাইরে গিয়ে খুল অল্প সংখ্যক মানুষই ছবিটির আসল বক্তব্য অনুধাবন করতে পেরেছে – ছেলে শিশুর উপর যৌন নির্যাতন, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একেবারেই একটি অনুচ্চারিত, ট্যাবু বিষয়। হাতেগোনা যে কয়েকটা খবর পত্রিকায় আসে, মূলত মাদ্রাসায় সংঘটিত যৌন কেলেঙ্কারির সারসংকলন হিসেবে, তার সবকটাতেই থাকে সমকামিতার লেবেল। কিন্তু সমলৈঙ্গিক শিশু যৌন নির্যাতনকে সমকামিতার মোড়কে বাজারজাত করা কতটা যুক্তিযুক্ত? বা কতটা ফলপ্রসূ? বা কতটা ক্ষতিকারক?
সমকামিতা বিরোধীদের খুব প্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত একটা অভিযোগ হচ্ছে সমকামী মাত্রই pedophile। তারা ছেলে শিশুদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে বিকৃত সুখ পায়। তাই সমকামিদের থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সমকামিতা বনাম pedophilia বিতর্ক আজকের নয়। যখন থেকে সমকামিরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য একাট্টা হওয়া শুরু করেছিল, তখন থেকেই একটা অংশ সমকামিতার সাথে শিশু যৌন নির্যাতন, পশ্বাচার, অজাচার এসব অপ্রাকৃতিক আচরণকে জুড়ে দিয়ে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সচেষ্ট। পশ্চিমা বিশ্ব যদিও এতদিনে সেখান থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে, বাংলাদেশে এই বিতর্ক বলতে গেলে এখন অব্দি শুরুই হয়নি।
সমকামিতা আর pedophilia নিয়ে কথা বলতে গেলে এদের সংজ্ঞা এবং ব্যপ্তি জানা ভীষণ প্রয়োজন। সর্বগ্রহণযোগ্য বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ‘pedophilia usually refers to an adult psychological disorder characterized by a preference for prepubescent children as sexual partners.’ বাংলায় বলতে গেলে pedophilia হচ্ছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মানসিক বৈকল্য যা তার বয়ঃসন্ধিপুর্ব শিশুদের যৌন সঙ্গী হিসেবে পাওয়ার কামনা দ্বারা বুঝা যায়। সমকামিতা বলতে একই লিঙ্গের দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মধ্যেকার মানসিক এবং শারীরিক সম্পর্ককে বুঝায়, যা ঐ দুজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে এবং নিজেদের সম্মতিক্রমে স্থাপন করে থাকে।
সমকামিতার সাথে পেডোফিলিয়ার পার্থক্য বুঝার জন্য এই একটি সংজ্ঞাই যথেষ্ট। যেখানে পেডোফিলিয়াকে মানসিক ব্যধি হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে সেখানে সমকামিতা কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একটি sexual orientation বা যৌন প্রবৃত্তি বা অভিমুখিতা। American Psychiatric Association বা APA কর্তৃক প্রকাশিত Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders (DSM), যা মানসিক স্বাস্থ্যের জগতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল বলে পরিচিত, সেখানেও পেডোফিলিয়াকে বলা হয়েছে এক ধরনের মানসিক ব্যাধি। সেই তালিকায় কিন্তু সমকামিতা নেই। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাও তার মানসিক ব্যাধির তালিকা International Classification of Diseases (ICD) থেকে সমকামিতাকে বাদ দিয়েছে সেই ১৯৯০ সালে।
সংজ্ঞার পাশাপাশি বড় আরেকটি পার্থক্য এই দুইয়ের প্রকাশ ব্যাপ্তিতে। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি এবং একটি শিশুর মাঝে যেকোন রকমের যৌন সম্পর্ক ভারসাম্যহীন কারণ তাতে শিশুটির সম্মতি দেওয়ার কোন সুযোগ থাকছে না। ঐ ব্যক্তি শিশুটিকে কৌশলে ব্যবহার করছে তার কামনা চরিতার্থ করার জন্য। এতে করে সেই শিশুটির শারীরিক এবং মানসিক জগতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
সমকামিদের পেডোফাইল হিসেবে আখ্যায়িত করার পেছনে শিশু যৌন নির্যাতন নিয়ে মূলধারার দৃষ্টিভঙ্গি বহুলাংশে দায়ী। এখানে একটা বিশাল ধারণাগত (conceptual) এবং পারিভাষিক (terminological) অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। যখনি কোন ছেলে শিশু একজন পুরুষ কর্তৃক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, তখনই আমরা ভেবে নেই নির্যাতনকারী একজন সমকামী। এই প্রেক্ষাপটে নির্যাতনকারী এবং নির্যাতনের শিকার দুজনের জৈবিক লিঙ্গ পরিচয়টাই প্রাধান্য পায়। অথচ সমকামিতা কোন লৈঙ্গিক পরিচয় নয়, এটা হচ্ছে যৌন প্রবৃত্তি। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন পুরুষ পেডোফাইল কোন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়না। এমনকি তার কোন নির্দিষ্ট লৈঙ্গিক অভিরুচি নেই। তার কাছে বয়সটাই মুখ্য। তারা শুধুমাত্র শিশুদেরকেই কামনা করে – হোক তা ছেলে বা মেয়ে। অপরদিকে একজন পুরুষ সমকামী আরেকজন পুরুষকেই কামনা করে। তার সাথে শারীরিক এবং মানসিক আদানপ্রদান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
পরিভাষা নিয়ে যেহেতু কথা হচ্ছে তখন বলে রাখা শ্রেয় যে pedophilia বা pedophile এই শব্দদ্বয়ের ঠিক মানানসই কোন পরিভাষা নেই বাংলায়। অনেকেই শিশুকামিতা ও শিশুকামী ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু এটা নিয়ে আমার ঘোর আপত্তি আছে। সমকামিতা, উভকামিতা বা বিসমকামিতার সাথে মিল রেখে শিশুকামিতা বললে মনে হতে পারে এটাও বুঝি এক প্রকারের যৌন প্রবৃত্তি বা sexual orientation, যা কিনা সহজাত এবং বহুলাংশে অপরিবর্তনীয়। এই ব্যাখ্যায় শিশু যৌন নির্যাতন আর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। ঝুঁকির মুখে পড়বে অগণিত শিশুর ভবিষ্যৎ। তার চেয়ে বড় কথা যৌন প্রবৃত্তি হিসেবে পেডোফিলিয়ার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। সুতরাং বাংলায় পেডোফিলিয়াকে সহজভাবে ‘শিশু যৌন নির্যাতন’ আর পেডোফাইলকে ‘শিশু যৌন নির্যাতনকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করাই শ্রেয়।
পেডোফিলিয়ার সংজ্ঞার আরেকটি মুখ্য কিন্তু কিঞ্চিত বিতর্কিত দিক হচ্ছে বয়স। APA-এর DSM অনুযায়ী একজন ব্যক্তি তখনই পেডোফাইল বলে গণ্য হবে যখন তার বয়স নিম্নতম ১৬ হবে আর ভিক্টিম হবে সর্বোচ্চ ১১। অর্থাৎ ১১ বা তার চেয়ে কম বয়সের কোন শিশুর প্রতি যদি ১৬ বা তার অধিক বয়সের কেউ তীব্র ও পৌনঃপুনিক যৌন আকাঙ্ক্ষা অনুভব করে বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে সেই ব্যক্তি পেডোফাইল। WHO-এর ICDতে অবশ্য এই বয়স নির্দিষ্ট করা নেই। বরং সেখানে বয়সের প্রান্তসীমা দিয়ে বলা হয়েছে এর মাঝের বয়ঃসন্ধিপুর্ব বা অগ্রিম বয়ঃসন্ধি কালের শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষনকে পেডোফিলিয়া বলে ধরা হবে।
বয়সের এই প্রান্তসীমার উপর ভিত্তি করে ICD পেডোফিলিয়াকে আরেকটি ভাগে ভাগ করেছে – হেবেফিলিয়া (hebephilia), যা ১১ – ১৪ বছর বয়সী সদ্য বয়ঃপ্রাপ্ত কিশোর-কিশোরীদের প্রতি যৌন আকর্ষন বুঝায়। APA-এর DSM-এ হেবেফিলিয়াকে উল্লেখ করা হয়নি। যেহেতু বয়ঃসন্ধিকাল ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয় এবং তা সমাজ, রাষ্ট্র আর ধর্মের উপরও বহুলাংশে নির্ভরশীল, তাই হেবেফিলিয়া যথেষ্ট বিতর্কিত এবং অমীমাংসিত বিষয়।
সমকামিতার সংজ্ঞায়নে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সেই-ই যে রাষ্ট্র এবং আইনের চোখে প্রাপ্তবয়স্ক। এখানেও বয়সের কারসাজি এবং সেটার রাজনৈতিকীকরন অনেক গুরত্তপুর্ন কিন্তু আজকের লেখার বিষয় সেটা নয়।
পেডোফিলিয়ার কথা উঠলে ছেলে শিশুদের কথাই বেশি শোনা যায় কারণ আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে ছেলে হয়ে আরেক ছেলের কাছে যাওয়া সহজতর। ছেলে শিশুরা সহজলভ্য এবং তাদের সাথে যৌনক্রিয়া সম্পাদন করা অপেক্ষাকৃত কম জটিল। এই পাশাপাশি মাদ্রাসা এবং চার্চ-এর ঘটনা তো আছেই। মূলত এই দুইয়ের কারণেই ছেলে শিশুদের নির্যাতনের কথা আসলেই সবাই ঢালাওভাবে সমকামিতাকে দোষারূপ করে।
আগেই বলেছি সমকামিতার সাথে পেডোফিলিয়ার কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা প্রমান করার জন্য বিস্তর গবেষণা হয়েছে পশ্চিমা বিশ্বে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে Groth এবং Birnbaum এর করা ১৯৭৮ সালের একটি গবেষণা যেখানে তারা ১৭৫ জন্য পুরুষকে স্টাডি করেছেন। এরা সবাই আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস রাজ্যে শিশু যৌন নির্যাতনের জন্য অভিযুক্ত হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে ৮৩ জন নিজেদের ‘fixated heterosexual’ বলে দাবি করেছিল, ৭০ জন্য বলেছিল ‘regressed heterosexual’ আর বাকি ২২ জন্য ছিল ‘regressed bisexual’। এই ২২জন উভকামিদের ব্যপারে Groth এবং Birnbaum দেখেছিলেন যে তারা তাদের যৌন অভিরুচির ক্ষেত্রে ছেলে শিশুদের চাইতে মেয়ে শিশুদের বেশি প্রাধান্য দিত।
আরেকটি গবেষণায় Dr Carole Jenny এবং তার সহকর্মিরা ডেনভার শিশু হাসপাতালের শিশু যৌননির্যাতন ক্লিনিক এর ৩৫২টি মেডিক্যাল চার্ট পর্যালোচনা করেছেন। ১৯৯২ তে শেষ হওয়া এক বছরের সেই গবেষণায় উঠে এসেছে যে ১% এর ও কম ক্ষেত্রে নির্যাতনকারী নিজেকে সমকামী হিসেবে দাবি করেছে।
প্রখ্যাত গবেষক Dr A Nicholas Groth ১৯৮২ তে প্রকাশিত এক বৈজ্ঞানিক জার্নালে উপসংহার টেনেছেন যে সমকামিতার সাথে পেডোফিলিয়ার কোন যোগসূত্র নেই। ১৯৯৮ তে Dr Nathaniel McConaghy ও একই কথাই বলেছেন যে যেসব পুরুষ ছেলে শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষন অনুভব করে তারা প্রাপ্তবয়স্ক কোন পুরুষকে কামনা করে না।
এসব বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে Dr Jenny Pediatrics-এ প্রকাশিত তার এক প্রবন্ধে বলেছেন সমকামিতার সাথে পেডোফিলিয়াকে মেলানো যতটা না শিশু যৌন নির্যাতনের সাথে সম্পর্কিত, তার চাইতে বেশি জড়িত মূলধারার পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতির সাথে। এবং আসলেই তাই। এটার শুরুটা হয়েছিল সমকামিতাকে একটা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। যেসব পুরুষ সমাজ, রাজনীতি এবং ধর্মের ধ্বজাধারী হয়ে বসে আছে, তারাই যে ঘৃণ্য শিশু যৌন নির্যাতনের সাথে জড়িত, সেই বাস্তবতা থেকে সবার দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরানোর জন্য।
সমকাম-বিরোধীরা আজও সমাজকে ভয় দেখিয়ে বেড়াচ্ছে যে সমকামীরা শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক। বিয়ে, পরিবার, দত্তক, সম্পত্তি, চাকুরী এসব অনেক মানবাধিকার থেকে সমকামিদের বঞ্চিত করার হীন প্রয়াস এসব প্রচারণা। আমেরিকাতে কট্টর ডানপন্থী লবিং গ্রুপ কোটি কোটি ডলার খরচ করছে সমকামিদের বিরুদ্ধে গবেষণাপত্র তৈরি করতে। আর বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে পেডোফিলিয়াকে দেয়া হচ্ছে আইনগত স্বীকৃতি ধর্ম আর প্রথার লেবাসে। শিশু যৌন নির্যাতন বা ক্ষেত্র বিশেষে হত্যা করে পার পেয়ে যাচ্ছে মাদ্রাসার হুজুর অথচ মানবাধিকার আর ভালোবাসার কথা বলায় চাপাতির তলে প্রাণ হারাচ্ছে সমকামী অধিকারকর্মী। উপরন্তু বাংলাদেশের আইনে ছেলে শিশুর উপর যৌন নির্যাতনকে স্বীকারই করা হয় না। নেই তাদের জন্য কোন রক্ষা কবচ। বিদ্যমান আইন যৌন নির্যাতন বলতে বুঝে শুধুমাত্র পুরুষ কর্তৃক নারী বা মেয়ে শিশুর উপর নির্যাতন।
শিশু যৌন নির্যাতন একটি নিকৃষ্টতম অপরাধ। আমরা যদি আসলেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ, সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে আমাদের এটা নিয়ে কথা বলতে হবে। সমাজকে তার অশিক্ষা, কুশিক্ষা এবং কূপমণ্ডূকতা দূর করে এই সত্য স্বীকার করে নিতে হবে যে শিশু যৌন নির্যাতনকারীর কোন নির্দিষ্ট লিঙ্গ পরিচয় বা যৌন প্রবৃত্তি নেই। সে সমকামী, বিসমকামী, উভকামী, পুরুষ, নারী, তৃতীয় লিঙ্গ যে কেউ হতে পারে। একজন শিশু যৌন নির্যাতনকারীর পরিচয় শুধু একটাই – সে একজন অপরাধী।
সাখাওয়াত হোসেন রাজীব: সমকামী অধিকারকর্মী
Shakhawat Hosen Rajeeb is an LGBTQ+ activist and lives in Sweden.
More Posts From this Author:
- None Found
লেখক সাখাওয়াত হোসেন রাজীব-কে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই – এই বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য । আপনার লেখার মাধ্যমে কিছু অজানা তথ্য পেলাম এবং নতুন কিছু শিখতে পারলাম ।
ড. জেন্নী-র সঠিক ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন – “রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা” – আসলেই তাই । সমাজ , রাষ্ট্র , মহারাষ্ট্র ও বিশ্বায়নের বাজার দখলের ষড়যন্ত্রকারী অতি-মহারাষ্ট্রের তথাকথিত রাজনৈতিক রথি-মসারথিরা তাদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে – কুসংস্কার ও ধর্মকে ব্যবহার করে ঘৃনার চাষ করে আসছে সেই সুদূর অতীত থেকেই । ঘৃনাকেই ওরা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে এবং এখনো করছে । – এর শিকার হয়েছে নারী-শিশু-বৃহন্নলা-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মানুষ ও সকল মানসিকতার মানুষ । এর থেকে রেহাই পায় নি ও পাচ্ছে না কেউই । এই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ধারাবাহিকভাবে ব্যবহৃত হবার ক্রমে সমকামী আক্রান্ত । তাই তো Pedophilia ও Hebephilia ইত্যাদি দোষে সমপ্রেম ও সমকামকে দূষিত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার/লোটার ষড়যন্ত্র চলছে !! তাই শিশু যৌনমিলন নির্যাতন (Pedephilia) সম্পর্কে সচেতন হওয়া ও সচেতন করার কোনো বিকল্প নাই ।
লেখককে পুনরায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
“Dr Jenny Pediatrics-এ প্রকাশিত তার এক প্রবন্ধে বলেছেন সমকামিতার সাথে পেডোফিলিয়াকে মেলানো যতটা না শিশু যৌন নির্যাতনের সাথে সম্পর্কিত, তার চাইতে বেশি জড়িত মূলধারার পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতির সাথে। এবং আসলেই তাই। এটার শুরুটা হয়েছিল সমকামিতাকে একটা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। যেসব পুরুষ সমাজ, রাজনীতি এবং ধর্মের ধ্বজাধারী হয়ে বসে আছে, তারাই যে ঘৃণ্য শিশু যৌন নির্যাতনের সাথে জড়িত, সেই বাস্তবতা থেকে সবার দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরানোর জন্য ।”