সারোয়ার তুষার

অভিমত | বাংলাদেশের শাসনতান্ত্রিক সংকট প্রসঙ্গে | সারোয়ার তুষার

রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা দিবে। রাষ্ট্র থাকবে সমাজের অন্তর্গত। সমাজে নানাবিধ স্বাধীন উদ্যোগ, সক্রিয়তা থাকে। ব্যক্তি ও সমাজের স্বাধীনতাকে নিঃশর্ত ধরে আইন ও ক্ষমতাকাঠামোর বিন্যাস তৈরি করা প্রয়োজন। নাগরিককে আইনত জুলুম-নিপীড়ন করার ঔপনিবেশিক মডেলের আইনের সাপেক্ষে মৌলিক অধিকারকে বিচার করা যাবে না। সমাজের দ্বন্দ্বগুলোর শান্তিপূর্ণ মীমাংসার পথ থাকা দরকার। একটা ইনক্লুসিভ ও গণক্ষমতাতান্ত্রিক

শুদ্ধস্বর : বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী

আমরা এমন একযুগে বাস করছি, যখন রক্ত দিয়েই চিন্তা করতে বাধ্য হচ্ছি। কালজয়ী এই উক্তির প্রবক্তা বাংলাদেশের স্বনামধন্য বুদ্ধিজীবী আহমদ ছফা। আহমদ ছফা তাঁর সময়কে চিহ্নিত করতে গিয়ে উল্লেখিত মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু ছফার এই উক্তি কি আজকের দিনে আরো অধিক প্রাসঙ্গিক নয়? আজকেও কি আমরা এই ভীষণ রকমের ‘anti knowledge’, ‘anti intellectual’ সময়ে রক্ত দিয়েই

অভিমত | স্বৈরাচার, স্বৈরতন্ত্র ও গণতন্ত্র | সারোয়ার তুষার

একটা গণঅভ্যুত্থানকে স্রেফ “সাংবিধানিক ক্ষমতা হস্তান্তরের ধারাবাহিকতা”র দিকে নিয়ে গিয়েছিল তৎকালীন পলিটিকাল পার্টিসমূহের নানামুখী জোট। সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন ঘটেছিল এইসব পার্টির হাতেই।   মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অব্যবহিত পরেই রাষ্ট্রগঠনের ‘আদিপাপ’ এর মীমাংসা না করেই এখানে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল তৎকালীন আওয়ামীলীগ পার্টির একক ইচ্ছায়। সেই ‘আদিপাপ’টা হলো স্বাধীন দেশের জন্য নতুন সংবিধান

ডানপন্থার বৈশ্বিক উত্থান : অর্জুন আপ্পাদুরাই এর তত্ত্বতালাশ ও পর্যালোচনা

এরদোয়ান তো সার্বভৌমত্বের রঙ্গমঞ্চে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রীতিমতো অনিবার্য টুল বানিয়ে ছেড়েছেন। একদিকে নব্য অটোমানবাদী কায়দায় ‘নয়া তুরস্ক’ নির্মাণ,  মুসলিম দুনিয়ার ত্রাতা হওয়ার সাম্রাজ্যবাদী বাসনা ; অন্যদিকে ইউরোপের দিকেও এক পা দিয়ে রাখা এরদোয়ানের রাজনৈতিক প্রকৃতি। ভিন্নমত এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার ক্ষেত্রে এরদোয়ান বরাবরই চরম নির্মম।   অর্জুন আপ্পাদুরাই ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী। বিশ্বায়নের সাংস্কৃতিক

সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও বর্ণবাদের ‘আগুন’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকার মহানবীকে কোন এক ‘কটূক্তি’ করেছে, এরপর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হলো, সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হলো, তার শাস্তি চেয়ে ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থী ছাত্রসংগঠনও রাস্তায় নামল। একটা কালেক্টিভ ও প্রাতিষ্ঠানিক জুলুম করা হচ্ছে তার প্রতি।এরপর থেকে এখনো পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।   বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে কোরআন ও

নজর ফেরাতে হবে চিলির দিকে….

চিলির এই অভূতপূর্ব গণ-জাগরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? শিখতে পারি এই যে, বাংলাদেসহ বিশ্বের বহু রাষ্ট্রে বর্তমানে যে শ্বাসরুদ্ধকর স্বৈরাচারী দুঃশাসন চলছে, সেই দুঃশাসনই শেষ কথা নয়! বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান প্রায় ‘বিকল্পহীন’ নানা মতাদর্শের নানা মোড়কের ডানপন্থী শাসনপ্রণালীর মধ্যে চিলির জনগণের এই অভূতপূর্ব উত্থান নিশ্চই দুনিয়ার মুক্তিকামী মানুষের মধ্যে এই হৃতপ্রায় বিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে যে,

যে সকল কারণে ধর্ষণের সাজা হিশেবে ‘মৃত্যুদণ্ড’ মহা বিপজ্জনক

মৃত্যুদণ্ড ও অপরাধ যেন এক যুগলবন্দি। মৃত্যুদণ্ডপন্থী সমাজে জীবনের প্রতি দরদ, শ্রদ্ধা, মর্যাদা কম থাকে। ঠিক একই কারণে সেখানে জীবনবিরোধী অপরাধও ঘটে বেশি বেশি। এরকম জনপদে অপরাধ মোকাবেলায় ‘সমাজ’ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এতে ‘সমাজ’-এর অপরাধবিরোধী সক্রিয়তা কমতে কমতে শূন্যে নেমে আসে। মৃত্যুদণ্ড অপরাধের আসল সামাজিক কারণগুলোও আড়াল করে। এতেও অপরাধ বাড়তে থাকে। –আলতাফ পারভেজ বাংলাদেশে

ধর্ষণ: সহিংসতা, বয়ান, পুনরুৎপাদন

যারা ধর্ষকের ক্রসফায়ার চায়, তাদের ধর্ষণ নিয়ে আপাত অর্থে ‘মহাউদ্বিগ্ন’ মনে হলেও আদতে ধর্ষণের মতাদর্শিক বাস্তবতা উৎপাদন ও প্রচারে তাদের ভূমিকাও কম না। কারণ বাংলাদেশ রাষ্ট্র আগাগোড়াই আইন-বেআইনের মোড়কে সহিংসতার উপর নির্ভরশীল একটা রাষ্ট্র, যেখানে সহিংসতাই রুল।আওয়ামীলীগ সরকার গত এক যুগে এই রাষ্ট্রীয় সহিংসতাকে নজিরবিহীন স্তরে নিয়ে গেছে।   সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর

দ্য লিঞ্চিং রিপাবলিক

ভারত এক বৃহৎ কারাগারে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকারসহ মানুষের সামগ্রিক কর্তাসত্তা নির্মম লিঞ্চিং এর শিকার ভারতে। এই পরিস্থিতি থেকে সহসা কোন উত্তরণ আছে কিনা জানিনা, তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রচলিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নিষ্ক্রিয়তা, নির্জীবতার মধ্যেই ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্টদের সমন্বয়ে নতুন এক নাগরিক শক্তি বিজেপি-আরএসএস এর নৃশংস রাজনৈতিক মতাদর্শকে প্রতিরোধের চেষ্টা করছে।     And it’s

গুম : দানবীয় রাষ্ট্রনৈতিক বাস্তবতা

অধ্যাপক আলী রিয়াজের মতে, গুম কিংবা ‘বিচারবহির্ভূত’ হত্যাকাণ্ড সমাজে ভয়ের পরিবেশ তৈরির এবং সেই ভয় সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে দেয়ার হাতিয়ার মাত্র। তাঁর মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের ‘নৈতিক বৈধতা’ (moral legitimacy) নেই; ফলে, ‘coercion was the only tool left in its political strategy toolbox. Through various measures, the regime ensured that a culture

মতাদর্শিক দ্বৈতচিন্তা

গণতন্ত্র শব্দটির মতাদর্শিক ব্যবস্থাগত মানে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, পাঁচ বছর অন্তর অন্তর ভোটাভুটি। কোন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভোটাভুটি যে থাকবে না তা না, নিশ্চই থাকবে। রাজনীতি অর্থনীতি সহ জনসংশ্লিষ্ট সমস্ত ইস্যুর ব্যবস্থাপনার অসংখ্য উপায়ের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে একটা মাত্র উপায়, কোনভাবেই একমাত্র উপায় না।   জর্জ অরওয়েলের ভুবনবিখ্যাত উপন্যাস ১৯৮৪’র অন্যতম একটি চাবিশব্দ হলো

শুদ্ধস্বর
error: Content is protected !!